শঙ্কর মণ্ডল: বিকৃত ইতিহাস রচয়িতারা রাজা প্রতাপাদিত্য ও রানি ভবানীর ইতিহাস বাংলার প্রজন্মের পর প্রজন্মকে জানতে দেয়নি। হাজার হাজার বিপ্লবীর মহান কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে কসুর করেনি পরাধীন বাংলার ঐ সুবিধাবাদী এক বৃহৎ পরিমাণ মানুষ। যারা সেই সময় স্বদেশী ডাকাত বলে বিপ্লবীদের ধরিয়ে দিত ব্রিটিশ পুলিশের হাতে। আর স্বাধীনোত্তর ভারতে এই খন্ডিত বাংলার বুকে কংগ্রেস কমিউনিষ্টদের বোঝাপড়া এক বিপুলভাবে ধ্বংসের বীজ বপন করে। যার ফলে আজ বাংলা কেবলই পিছনের দিকে এগিয়ে চলেছে।
একদিকে একটি দল, যারা এই ভারতবর্ষের রাষ্ট্রের কনসেপ্টকেই বিশ্বাস করে না, যারা বিশ্বাস করে India as a Maltinational States. যারা এই রাজ্যে ৩৪ বছর শাসন করে রাজ্যের সার্বিক বিপর্যয় ঘটানোর সাথে সাথে সবচেয়ে বড় যে সর্বনাশ করেছে, সেটা হল ভারতীয় সংস্কৃতি ও দর্শনকে হত্যা করে বৈদেশিক সংস্কৃতিকে প্রতিষ্ঠা করা। আর অন্যদিকে বর্তমান তৃণমূল পুরোপুরি রাজ্যটাকে চোর জোচ্চরদের কারখানায় পরিণত করেছে। এদের চৌর্য্যবৃত্তি বা দুর্নীতি সমগ্র দেশ তো বটেই, সারা পৃথিবীতেও জুড়ি মেলা ভার।
তবে ৩৪ বছরের কমিউনিষ্ট ও ১২ বছরের তৃণমূল একটা ব্যাপারে পুরোপুরি এক। সেটা হল মৌলবাদী শক্তিকে মদত দান। কমিউনিষ্টরা আদর্শগতভাবে যা বিশ্বাস করে, তার মাধ্যমে আমরা বলতেই পারি কমিউনিজুম এণ্ড ইসলামিক ফাণ্ডামেন্টালিজম, বোথ আর সেম। উইথ আউট দাস ক্যাপিটাল। সুতরাং কমিউনিষ্টরা মৌলবাদী শক্তিকে সমর্থন করবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তৃণমূল? সত্যিই কি তারা রাজনৈতিক দল? যদিও আদর্শ কি, তা কোনও তৃণমূলী বলতে পারবে না। সেটা আমি নিশ্চিত। এমনকি রোজ বিভিন্ন চ্যানেলে গলাফাটানো নেতা থেকে শুরু করে পাড়ার ছোটখাটো তোলাবাজ নেতা পর্যন্ত, কেউ কি বলতে পারবে? তৃণমূলের সহ সভাপতি কজন? সাধারন সম্পাদক বা সম্পাদক কতজন? পারবে না।
আসলে তৃণমূল কোনও গঠনতন্ত্র, সংবিধান ইত্যাদি সম্বলিত কোনও দলই নয়। কেবল মমতা ব্যানার্জীর গুণগান করা ও বর্তমানে যুবরাজের তৈলমর্দনই একজন যোগ্য তৃণমূল কর্মীর উপযুক্ত হওয়ার মাপকাঠি। আর নবজোয়ার আর একটা নাটক ছাড়া কিছুই নয়। যেমন এর আগে দিদিকে বলো থেকে শুরু করে দিদির দূতের নাটক মানুষ দেখেছে। তবে বর্তমান অভিষেকের এই কর্মসূচীর মাধ্যমে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচন আগামী দু মাসে যে হচ্ছে না, তা জলের মত পরিষ্কার। আসলে এই রাজ্যে রাজনীতি ও প্রশাসন এক হয়ে গেছে। এখানে কোনও আইনগত অবস্থান নেই।
যাই হোক, আমরা এই মুহূর্তে বাস্তব পরিস্থিতিতে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন নেতৃত্বের সন্ধানে এগোতে চাই। কারণ, ভবিষ্যতের ভয়াবহতা সম্পর্কে এখনও যদি মানুষকে জানানো না হয়, তাহলে ভবিষ্যত প্রজন্ম কোনওদিনই ক্ষমা করবে না।
লেখক সংযুক্ত হিন্দুফ্রন্টের সভাপতি। মতামত ব্যক্তিগত।
previous post