কোয়েটা, ৫ জানুয়ারি: পাকিস্তানে ফের ভয়াবহ বিস্ফোরণ। এবার ঘটনাস্থল বালুচিস্তানের কোয়েটা। আজ, রবিবার দুপুরে কোয়েটা পুলিশ লাইনের অদূরে সিরাজাবাদের কাছে পুলিশের একটি গাড়ি পৌঁছতেই বিস্ফোরণটি ঘটে। পদস্থ পুলিশ আধিকারিকের ওই গাড়িটি কোয়েটা-সিবি জাতীয় সড়ক ধরে আসে। বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত জখম হয়েছে পাঁচজন। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী রয়েছেন বলে খবর। বিস্ফোরণের পর পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ঘিরে ফেলে গোটা এলাকা। আহতদের উদ্ধার করে নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিস্ফোরণের সময় কোয়েটায় নবাব আকবর বুগতি স্টেডিয়ামে পাকিস্তান সুপার লিগের একটি প্রদর্শনী ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ৩০ মিনিটের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় দর্শকরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। পরে প্রশাসনের নির্দেশ পাওয়ার পর সেই ম্যাচ আবার চালু করে দেওয়া হয়। এদিকে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)। পাক প্রশাসন সূত্রে প্রাথমিক অনুমান, পুলিশকে লক্ষ্য করেই এই বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গি সংগঠন টিটিপি। কারণ, পুলিশ ও নিরাপত্তা রক্ষীরা যে তাদের লক্ষ্যবস্তু তা টিটিপি স্বীকার করে নিয়েছে।
প্রসঙ্গত বেশ কিছু দিন ধরে পুলিশকে লক্ষ্য করে বিভিন্নভাবে হামলা চালাচ্ছে টিটিপি। গত ৩০ জানুয়ারি সোমবার পেশোয়ারে একটি মসজিদে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটে। সেই বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন শতাধিক মানুষ। বিস্ফোরণের ঘটনায় আত্মঘাতী জঙ্গি পুলিশের উর্দি পরে এসেছিল। পাকিস্তান পুলিসের প্রাথমিক তদন্তে এমন তথ্যই সামনে এসেছে। এক্ষেত্রে নিরাপত্তায় বড়সড় গাফিলতি ছিল বলেই মেনে নিয়েছেন খাইবার পাখতুনওয়া প্রদেশের পুলিশ প্রধান মোয়াজ্জম জাহ আনসারি।
আনসারি বলেন, ‘ওই আত্মঘাতী জঙ্গির পরনে ছিল পুলিশের পোশাক। সেজন্য নিরাপত্তারক্ষীদের কোনও সন্দেহ হয়নি। ফলে, সহজেই সে প্রার্থনাস্থলে পৌঁছে যায়।’ তিনি আরও বলেন, মসজিদে ছিলেন কয়েকশো পুলিশকর্মী। তাই সেখানে নিরাপত্তারক্ষীদের আরও বেশি সজাগ থাকা উচিত ছিল।’ বিস্ফোরণের তীব্রতায় মসজিদের দেওয়ালের একটি অংশ ভেঙে পড়ে। চাপা পড়েন প্রার্থনারত পুলিশকর্মীরা। পরে তেহরিক ই তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) এই হামলার দায় স্বীকার করে। আনসারিকে উদ্ধৃত করে ‘দ্য ডন’ জানায়, ‘ওই আত্মঘাতী জঙ্গি মোটরবাইকে চড়ে মেন গেট দিয়ে ঢুকেছিল। তারপর এক কনস্টেবলের কাছে জানতে চায়, মসজিদটা ঠিক কোন দিকে। অর্থাৎ মসজিদের অবস্থান সম্পর্কে আগে থেকে ওই জঙ্গির কোনও ধারণা ছিল না।’ এই বিস্ফোরণের ক্ষেত্রে বাহিনীর কারও হাত ছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
previous post