মালদা: আবাস যোজনা প্রকল্পে দুর্নীতি নিয়ে ফের কাঠগড়ায় শাসক দল। হরিশ্চন্দ্রপুরে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের উপস্থিতিতে বিডিওর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ স্থানীয়দের। অন্যদিকে রতুয়ায় আবাস যোজনার তালিকায় বিহারের বাসিন্দার নাম দেখে চক্ষু চড়কগাছ কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের। দুই জায়গায় আবাস যোজনা নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ স্থানীয়দের। কাঠগড়ায় শাসক দল। জেলার বিভিন্ন এলাকায় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল। একদিকে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল থাকাকালীন পঞ্চায়েতের বাইরে বিডিওর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ স্থানীয়দের। অন্যদিকে বিহারের পঞ্চায়েত সদস্যের নাম এই রাজ্যে আবাস যোজনার তালিকায় নাম। গ্রামে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার টাকার কাটমানির বিনিময়ে ঘর দেওয়ার অভিযোগ স্থানীয়দের।
বুধবার বিকেলে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নং ব্লকের ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েতে আসে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। পঞ্চায়েত দপ্তরের ভেতরে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। সেই সময় ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকার মানুষেরা এসে পঞ্চায়েতের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, সমগ্র পঞ্চায়েত এলাকায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্প নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণ করেছে তৃণমূল। কাটমানির বিনিময়ে দেওয়া হয়েছে ঘর। বঞ্চিত হয়েছে যোগ্যরা। কিন্তু সেই নিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নং ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক বিজয় গিরির কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে উল্টে দুইজন সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধেই কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল থাকাকালীন পঞ্চায়েতের বাইরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের বিরুদ্ধে উঠে স্লোগান।
অন্যদিকে রতুয়া ১ নং ব্লকের মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত গোবিন্দপুর গ্রামে গিয়ে আবাস যোজনার তালিকা খতিয়ে দেখতেই চক্ষু চড়কগাছ কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যদের। তালিকায় নাম রয়েছে বিহারের কাটিহার জেলার দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বাহারসাল গোবিন্দপুরের বাসিন্দা শ্যাম যাদবের। যিনি আবার দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। তার মা নিভা দেবিও কার্যত মেনে নিয়েছেন তিনি বিহারের বাসিন্দা। এদিকে এই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে আবাস যোজনায়। সাত থেকে দশ হাজার টাকা কাটমানির বিনিময়ে দেওয়া হয়েছে ঘর। দুর্নীতির অভিযোগ স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল এলাকায় এলাকায় যেতেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটছে সাধারণ মানুষের। পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগে অস্বস্তিতে শাসক দল।
হরিশ্চন্দ্রপুরের ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েতের স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ আলাউদ্দিন বলেন,” বিডিওর কাছে অভিযোগ জানাতে গিয়ে আমাদের দুইজন সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আবাস যোজনায় দুর্নীতি হয়েছে আমরা এটা বলতে গেছিলাম।”
রতুয়ার মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের গোবিন্দপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মতিন বলেন,” সাত থেকে দশ হাজার টাকা কাটমানির বিনিময়ে দেওয়া হয়েছে ঘর। যারা দিতে পারেননি তাঁদের নাম নেই তালিকায়। তৃণমূলের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য দুর্নীতি করেছে।”
আবাস যোজনার তালিকায় নাম থাকা বিহারের বাসিন্দা শ্যাম যাদবের মা নিভা দেবী বলেন,”আমার ছেলে বিহারের দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সদস্য ছিল। ছেলের নামে ঘর এসেছে।”