23 C
Kolkata
December 25, 2024
উত্তর সম্পাদকীয়

সুকান্ত মজুমদারের ওপর দিয়ে ডায়মন্ড হারবার মডেল প্রকাশিত হল

শঙ্কর মন্ডল

ডায়মন্ড হারবার মডেল আজ রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের ওপর একপ্রকার হামলার মাধ্যমে প্রকাশিত হল। আর এই বিক্ষোভের নামে হামলা জয়নগরের নতুন হাটে এই রাজ্যের পুলিশ কী করে ঘটতে দিল, সেটাই তদন্তের প্রয়োজন। যদিও সুকান্ত মজুমদার তৃণমূলের এই হামলার কর্মসূচিকে আরও নগ্ন করে দেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করল। হ্যাঁ, তার জন্য ওনাকে কিছুটা মার খাওয়ার ক্ষমতা ধরতে হত। মনে রাখতে হবে, রাজনীতিতে নেতৃত্ব দিতে গেলে মৃত্যুভয় পরিত্যাগ করতে হয়। তবেই সফলতা পাওয়া যায়। মমতা ব্যানার্জি কিন্তু এরকম ঘটনার মুখোমুখি বহুবার হয়েছেন। লালু আলমের লাঠির ঘা মমতা ব্যানার্জিকে কিন্তু বিপুল জনপ্রিয় করে তুলেছিল।

আবাস যোজনা নিয়ে যে নগ্ন চেহারা উঠে এসেছে, সেগুলো নিয়ে প্রথমে বঞ্চিত মানুষকে দিয়ে কেন তার RTI করা? তারপর যাঁরা ঘর পেয়েছেন, তাঁদের বিস্তারিত, মানে স্পেসিফিক তথ্য নিয়ে আইনি লড়াই, মানে আদালতে জনস্বার্থ মামলা ও তারপর এই নিয়ে ব্যাপক গণ আন্দোলন রাজনৈতিক ডিভিডেন্ট দেবে? আর শিক্ষা ব্যবস্থার অবনতি ও গৌতমবাবুর অবিশ্বাস্য অনুপ্রাণিত হওয়া, যার মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের পরীক্ষা নিয়ে যুদ্ধকালীন তৎপরতা দেখানোর গ্যালারি শো, এক মনোরম সিনেমার রসদ হতে পারে।

আসলে তৃণমূল কংগ্রেস যতদিন এই রাজ্যে ক্ষমতায় আছেন, ততদিন কোনও সুস্থ পরীক্ষা ব্যবস্থা, কোনও সুস্থ আইনি ব্যবস্থা পরিচালনা একপ্রকার অসম্ভব। মানুষ এই সরকারকে না বলে দিতে চাইছে। কিন্তু তার জন্য উপযুক্ত বিকল্পের অভাব, কারণ সিপিএম, কংগ্রেস যতই লম্ফঝম্প করুক না কেন, ওদের আদর্শগত সমর্থন এই রাজ্যের মানুষ করে না। উপযুক্ত বিকল্পের অভাবেই একটা দীর্ঘ সময় মানুষ কংগ্রেস বিরোধিতার জন্যই সিপিএমকে সমর্থন করত। কিন্তু এই কংগ্রেসের সাথে সিপিএমের গোপন বোঝাপড়া এখন প্রকাশ্যে। তাই মানুষ এদের কোনওভাবেই সমর্থন করতে পারে না। আর মানুষের একটা বড় অংশ জেহাদীদের বিরুদ্ধে সতর্ক। আর এরপরেও যদি সুকান্তবাবুরা স্বাবলম্বী হতে না পারেন, তাহলে সেটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আসলে এরা বুঝতেও পারে না, বুঝতেও চায় না। বাংলার রাজনীতি এমনিতেই একটু আলাদা।

তাই চিরাচরিত মিটিং মিছিল এখানে খুব বেশি প্রভাব ফেলে না। এর জন্য লাগে আন্দোলনের মাধ্যমে উঠে আসা একটি বিশ্বাসযোগ্য মুখ। আর তাছাড়া একটা জিনিস এরা বোঝে না, সেটা হল জোর করে আপনি চাইলেই বুথস্তর পর্যন্ত সংগঠন গড়ে তুলতে পারবেন না। সেটা কৃত্রিম সংগঠন হলেও হতে পারে, যা দিয়ে আর যাই হোক যুদ্ধ জেতা সম্ভব নয়। দিল্লির আম আদমি পাটি বা এই রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেসের বুথস্তরে কোনও সংগঠনই ছিল না। ক্ষমতায় আসার আগে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গুরু আন্না হাজারের আন্দোলন বা মমতা ব্যানার্জির সিপিএম বিরোধী আন্দোলন, বুথস্তরের মানুষকে প্রভাবিত করেছিল। মানুষ তার জন্যই ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিল। সেখান থেকেই গড়ে উঠেছিল সংগঠন। তাই এমন আন্দোলন ও তার মাধ্যমে একজন বিশ্বাসযোগ্য নেতাই পারে সংগঠন তৈরি করতে। তার জন্য নেতাকে জীবন বাজি রাখতে হবে। এখন যাঁরা আসছে বা পদ পাচ্ছে, তাঁরা কোনও কথা শুনতেই চায় না, এবং শিখতেও চায় না। তাই এদের দিয়ে কেবল সময় নষ্ট বা আগামী দিনের জন্য তার একটা জঘন্য নেতৃত্ব তৈরি হওয়া ছাড়া আর কিছুই হবে না। সুতরাং পরিশেষে বলি হে মা এদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক।

[ বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ লেখক সংযুক্ত হিন্দু ফ্রন্টের সভাপতি। মতামত ব্যক্তিগত। আপনিও আপনার স্বাধীন মতামত প্রকাশ করুন আমাদের উত্তর সম্পাদকীয় কলামে। লেখা ইউনিকোড ফন্টে টাইপ করে ই-মেল করুন। আমাদের ই-মেল আইডি: sangbadkolkata@gmail.com ]

Related posts

Leave a Comment