21 C
Kolkata
December 24, 2024
Uncategorized

ন্যায্যমজুরি ও জমির অধিকারের দাবিতে সংঘটিত হল সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের সদর ব্লক সম্মেলন

জলপাইগুড়ি, ১৮ই ডিসেম্বর: ১০০ দিনের কাজের মজুরি প্রদান, অবিলম্বে নতুন কাজ শুরু করা, ১০০ দিনের কাজকে ২০০ দিন করা, নকল বীজ বিক্রি বন্ধ করে সার বীজ সহ জমিতে ব্যবহৃত অন্যান্য কৃষি সামগ্রীর মূল্য নিয়ন্ত্রণ, বন্ধ হয়ে থাকা তিস্তা সেচ প্রকল্প অবিলম্বে চালু করে জমিতে জল পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা, জীবনধারণের উপযোগী মজুরি নির্ধারণ, গ্রামীন এলাকার সমস্ত রাস্তাঘাট সংস্কার সহ বিভিন্ন দাবিতে সারা ভারত মজুর ইউনিয়ন জলপাইগুড়ি সদর ব্লক কমিটির দ্বিতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হল কমরেড খইরুল আলম মঞ্চ কমরেড সন্তোষ দাস নগর অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের ঝাঁ বাড়ি মোড় এলাকায়। পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের কাজ শুরু হয়। পতাকা উত্তোলন করেন সংগঠনের সভাপতি নবাব আলী। শহীদ বেদীতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন সভাপতি নবাব আলি, সম্পাদক ইন্দ্রনীল বোস, বর্ষীয়ান কৃষক নেতা প্রাক্তন সংসদ জিতেন দাস, অভ্যর্থনা কমিটির সভাপতি তপন গাঙ্গুলী, সারা ভারত মজুরি ইউনিয়নের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি মোক্তাল হোসেন সহ অন্যান্য নেতৃত্ববৃন্দ। পতাকা উত্তোলনের শেষে আগামী ২৭ তারিখ অনুষ্ঠিত সারাভারত খেত মজুর ইউনিয়নের জলপাইগুড়ি জেলা সম্মেলন ও সমাবেশকে সফল করার আহ্বান জানিয়ে মিছিল করেন উপস্থিত প্রতিনিধি সহ অন্যান্য সকলে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আগামী ২৭শে ডিসেম্বর সারা ভারত ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের জলপাইগুড়ি জেলা সম্মেলনকে সামনে রেখে সদর ব্লকের বাহাদুর গ্রাম পঞ্চায়েতে জুহুরি তালমার মাঠে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে এক বিরাট সমাবেশ। সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের রাজ্য সভাপতি তুষার ঘোষ, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্ব সুজন চক্রবর্তী, প্রাক্তন ছাত্র যুব আন্দোলনের নেতৃত্ব সায়নদীপ মিত্র, সিপিআইএম জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সম্পাদক সলিল আচার্য, সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মন্ডলী সদস্য শ্রমিক নেতা জিয়াউল আলম সহ অন্যান্য নেতৃত্ববৃন্দ। বর্ষিয়ান কৃষক নেতা বর্তমান ক্ষেতমজুর আন্দোলনের নেতৃত্ব সমীজউদ্দিন আহমেদ ও নবাব আলিকে নিয়ে গঠিত সভাপতি মন্ডলী, ইদ্রনীল বোস ও দীপশুভ্র সান্যালকে নিয়ে গঠিত পরিচালন সমিতি সম্মেলনের কাজ পরিচালনা করেন। সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি মোক্তাল হোসেন। তিনি তার বক্তব্যে তুলে ধরেন বামফ্রন্ট সরকার গঠনের আগে যুক্তফ্রন্ট সরকারের আমলে ভূমিহীন বর্গাদার খেতমজুর মানুষদের মধ্যে যুক্তফ্রন্ট সরকারের ‘লাঙ্গল যার, জমি তার’ স্লোগান তুলে অপারেশন বর্গার মধ্য দিয়ে জমি বন্টনের ইতিহাস। বামফ্রন্ট সরকারের আমলে গ্রামীণ এলাকায় স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে আজ গ্রামাঞ্চলে শিক্ষার হার বেড়েছে।

বর্তমান সময়ে চাষাবাদ করে কিছু জমি জায়গা কিনে, ধান, পাট, আলু সহ বিভিন্ন শাক সব্জির ব্যবসা করে আয় বাড়িয়ে গ্রামীণ অর্থনীতিতে বেড়েছে এক শ্রেণীর নব্য ধনীর সংখ্যা। আজ এরাই মূলত শাসক দলের হয়ে গ্রামীণ এলাকায় দাপট দেখাচ্ছে। গ্রাম পঞ্চায়েতের ঠিকাদারি করে উপার্জিত বিপুল অর্থে এই মানুষরা শাসক দলের হয়ে গ্রামীণ এলাকায় ভোট লুটের মধ্য দিয়ে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মানুষের অধিকার হরণ করেছে। এই শ্রেণীর মানুষদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর ডাক দিয়েছে ছাড়া ভারত খেতমজুর ইউনিয়ন। সারা ভারত কৃষকসভা কৃষকের সংগঠন কৃষকের সাথে খেত মজুরের কোনও দ্বন্দ্ব নেই। কৃষকের দাবিও আমাদের দাবি, ফসলের ন্যায্যমূল্য না পেলে ক্ষেতমজুরের মজুরি বৃদ্ধি সম্ভব নয়। তাই আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে গরিব মানুষের ঐক্য গড়ে তুলে পঞ্চায়েতে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে বামপন্থীদের বিপুলভাবে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানান তিনি। সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিআইটিইউ-র অন্যতম জেলা সম্পাদক শুভাশিস সরকার, কৃষক নেতা আজম আলি আব্বাস, অভ্যর্থনা কমিটির সভাপতি কৃষক নেতা তপন গাঙ্গুলী, সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের জেলা সম্পাদক মন্ডলী সদস্য সমীজউদ্দিন আহমেদ, কৌশিক ভট্টাচার্য সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সম্মেলন শেষে নবাব আলিকে সভাপতি ও ইন্দ্রনীল বোসকে সম্পাদক পুনর্নির্বাচিত করে ২৭ জনের নতুন ব্লক কমিটি গঠিত হয়।

Related posts

Leave a Comment