29 C
Kolkata
June 16, 2025
কলকাতা

হাওড়া পৌর নিগমে দুর্নীতি, জঞ্জাল সংগ্রহের ২৩০টি টোটো নিরুদ্দেশ

অভিজিৎ হাজরা, হাওড়া: কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা দুর্নীতি করার অভিযোগ উঠেছে হাওড়া পৌর নিগমের বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে, হাওড়া পৌর নিগম এলাকার ২২ নং ওয়ার্ডে ঘটা করে চালু করা হয়েছিল ‘গ্ৰীন হাওড়া, ক্লিন হাওড়া ‘। হাওড়া পৌর নিগমের পক্ষ থেকে প্রকল্পটিকে মুখ্য পরিকল্পনা হিসাবে গ্ৰহণ করা হয়। ‘স্বচ্ছ ভারত মিশন’ কেন্দ্রীয় প্রকল্প হওয়া সত্ত্বেও এই প্রকল্পের নাম পরিবর্তন করে ‘নির্মল বাংলা’ নামকরণ করার অভিযোগ উঠেছে। এই প্রকল্পে গোটা হাওড়া শহরজুড়ে জঞ্জালের ভ্যাট শূন্য হাওড়া শহর গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়।

প্রকল্প কার্যকরী করার জন্য ‘নীলু’ এবং ‘ পচু ‘ নামে দুটি করে বালতি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের দেওয়া হয়। হাওড়া পুর নিগমের পক্ষ থেকে দেওয়া এই দু’টি বালতির একটিতে পচনশীল এবং অন্য আর একটিতে অপচনশীল দ্রব্য ফেলার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। পৌর নিগমের পক্ষ থেকে প্রতি বাড়ি থেকে ঐ জঞ্জাল সংগ্ৰহ করার জন্য ২৫০টি টোটো গাড়ি কেনা হয়। বর্তমানে ২৫০টি টোটোর মধ্যে মাত্র ২০টি টোটো আছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বাকি ২৩০ টি টোটো কি হল তার কোনও খবর পৌর নিগমের কাছে নেই।

এজন্য হাওড়া পৌর নিগমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিজেপি-র রাজ্য সম্পাদক উমেশ রাই বলেন, ‘গ্ৰীন হাওড়া, ক্লিন হাওড়া ‘ প্রকল্পের জন্য হাওড়া পৌর নিগম ২৫০ টি টোটো কিনেছিল কেন্দ্রের দেওয়া টাকায়। এই টোটোগুলিকে চলমান ভ্যাট বানিয়ে বাড়ির জঞ্জাল সংগ্ৰহ করার উদ্দেশ্য ছিল ‘।

হাওড়া টিকিয়াপাড়া এলাকাতেই রাখা ছিল ওই টোটা গাড়িগুলি। টোটো গাড়ি কেনা হলেও এখনও পর্যন্ত হাওড়া শহর গ্ৰীন হল না। হল না ক্লীনও। অপর দিকে হাওড়া পৌর নিগমের কাছে টোটো গাড়িগুলোর কোনও খবরও নেই। উমেশ রাই অভিযোগের সুরে বলেন, ‘ওই টাকা কে লুঠ করল, তার কোনও হদিশ নেই। হাওড়া শহর চূড়ান্ত অব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে। পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না সাফাই কর্মীরা। সাফাই কর্মীদের কাছে নেই কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় কাজের সরঞ্জাম। এখন আবার জঞ্জাল সাফাই করার জন্য নতুন করে ‘নিশান গাড়ি’ কেনা হচ্ছে। উমেশ রাই দাবি করেন, ‘হাওড়া পৌর নিগমের বর্তমানে একটাই উদ্দেশ্য নতুন নতুন পরিকল্পনা গ্ৰহণ করে তার পাশ করিয়ে, টাকা অনুমোদন করিয়ে লুঠ করা, কাটমানি খাওয়া। এই ডাস্টবিন ‘স্বচ্ছ ভারত মিশন ‘ প্রকল্পে দেওয়া হয়েছিল হাওড়া শহরের এলাকাগুলি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য ‘।

তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘হাওড়া পৌর নিগমের হিসাবের কোনও অডিট রিপোর্টও নেই। যদি প্রকৃত তদন্ত হয়, তাহলে হাওড়া পৌর নিগমের একের পর এক আর্থিক কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসবে। এই সব দুর্নীতি ঢাকা দিতে মাঝে মধ্যেই পৌর নিগমের প্রশাসক মন্ডলী পরিবর্তন করা হয়। অরাজনৈতিক লোকেদের নিগমে বসিয়ে প্রকৃত দুর্নীতি চেপে রাখা হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।

বিরোধীদের করা যাবতীয় দুর্নীতির অভিযোগ শুনে হাওড়া পৌর নিগমের মুখ্য প্রশাসক ডাঃ সুজয় চক্রবর্ত্তী বলেন, ‘এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য এই মুহূর্তে তাঁর হাতে নেই। তবে যখন সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযোগ উঠেছে, তখন বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হবে। যদি দেখা যায় জনসাধারণের অর্থের অপচয় হয়েছে, তাহলে সেই ব্যক্তি বা যাঁরা এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, সেই ব্যক্তি বা জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Related posts

Leave a Comment