বিশেষ সংবাদদাতা, মালদহ: ফের প্রকাশ্যে জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত হরিশ্চন্দ্রপুর সদরে ডাক বাংলোর কাছে তেতুলবাড়ি ব্রিজের নিচের জলাভূমি মাটি দিয়ে ভরাট করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, সরকারের খাস জমি দশ টাকার স্ট্যাম্প পেপারে সই করে রাতারাতি লক্ষ লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। সেই জমিতে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু বিল্ডিং তৈরি হয়েছে। যেখানে মানুষ বসবাস করছে। এদিকে জলাভূমি ভরাট হওয়ার ফলে সমস্যায় পড়েছে নিকাশি ব্যবস্থা। কারণ ওই নয়ানজুলি দিয়ে সদর এলাকার জল বের হতো।
বিরোধীদের অভিযোগ, সম্পূর্ণটাই হচ্ছে তৃণমূলের নেতাদের মদতে। শাসকদলের মদত ছাড়া এই কাজ করা সম্ভব না বলে দাবি বিরোধীদের। এর আগেও হরিশ্চন্দ্রপুরের ঐতিহ্যবাহী গড়গড়ি মাঠ এইভাবেই বিক্রি করে দিচ্ছিল জমি মাফিয়ারা। সেই সময় স্থানীয় আদিবাসীদের আন্দোলন এবং খবরের জেরে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। দখল মুক্ত করা হয় ওই মাঠ। আর এবার একদম বন ও ভূমি দপ্তরের সামনেই খাস জমি দখল করে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ।
প্রাক্তন বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষের দাবি, তিনি দায়িত্বে থাকাকালীন একাধিকবার এই নিয়ে চিঠি করেছিলেন। কিন্তু তৃণমূলের প্রভাবশালীদের মদত থাকায় কিছু সম্ভব হয়নি। যদিও পঞ্চায়েত সমিতি সেই সময় ছিল তৃণমূলের দখলে। তিনিও তৃণমূলেরই জনপ্রতিনিধি ছিলেন। পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। বর্তমানে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক পঞ্চায়েত সমিতি রয়েছে কংগ্রেস-সিপিআইএম জোটের দখলে। বর্তমান ভূমি কর্মাধ্যক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে প্রশ্ন উঠছে, যে সময় জমি দখল হল সেই সময় কিভাবে প্রশাসনের নজর এড়াল? কেনই বা বারবার এইভাবে সরকারি জমি দখল করে অবৈধভাবে বিক্রি করা হবে। তবে কি প্রশাসনের একাংশও যুক্ত রয়েছে জমির মাফিয়াদের সঙ্গে। অন্যদিকে তৃণমূলের সাফাই, আইন আইনের পথেই চলবে। কেউ দোষ করলে দল পাশে দাঁড়াবে না। গোটা ঘটনা সামনে আসতেই ব্যাপক রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে।