সংবাদ কলকাতা, ১২ আগস্ট: স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর ব্রিটিশ আমলে পাশ হওয়া তিনটি ফৌজদারি দন্ডবিধি ছুড়ে ফেলে দিল কেন্দ্র সরকার। বাদল অধিবেশনের শেষ দিনে এমনই জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। এর পরিবর্তে তিনি তিনটি ভারতীয় আইন পাশ করার কথা বলেন। ইন্ডিয়ান পেনাল কোড, ক্রিমিনাল প্রসিডিও-র কোড, এবং ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট এর পরিবর্তে ৬০০ পাতার তিনটি ভারতীয় আইন পাশের কথা বলেন তিনি।
উল্লেখ্য, ব্রিটিশ আমলে ১৮৬০ সালে পাশ হওয়া আইপিসি-র পরিবর্তে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ১৮৭২ সালের সিআরপিসি-র পরিবর্তে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং ১৮৯৮ সালের ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্টের-এর পরিবর্তে আনা হয়েছে ভারতীয় সাক্ষ্য আইন।
সূত্রের খবর, ২০২০ সাল থেকে এই তিনটি আইন বাতিলের প্রস্তুতি নিয়েছে কেন্দ্র সরকার। বিষয়টি প্রতিটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে কেন্দ্র সরকারের তরফে।
নতুন আইনে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৫৫ নং ধারায় বলা হয়েছে, কোনও ভুয়ো খবর ছড়িয়ে দেশের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ জানালে জরিমানা সহ সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদন্ড হতে পারে। ১৫০ ধারায় সন্ত্রাসবাদ, বিচ্ছিন্নতাবাদ ও নাশকতার দ্বারা দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখন্ডতাকে বিপন্ন করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান আছে। পাশাপাশি, ফৌজদারি দণ্ডবিধি অনুযায়ী, গণপিটুনিতে হত্যা ও নাবালিকা ধর্ষণের মতো ঘটনার ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডের বিধান দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ই-মেলের মাধ্যমে এফআইআর-এর সুবিধার কথা বলে হয়েছে এই আইনে।
এই আইনে আরও বলা হয়েছে, ৯০ দিনের মধ্যে যে কোনও তদন্তের চার্জশিট জমা দিতে হবে তদন্তকারী সংস্থাকে। তবে কোর্টের অনুমতি সাপেক্ষে অতিরিক্ত ৯০ দিন সময় পেতে পারে তদন্তকারী সংস্থ। কিন্তু, ১৮০ দিনের মধ্যে যেকোনও তদন্ত শেষ করতে হবে। চার্জশিটের ৩০ দিনের মধ্যে বিচার ব্যবস্থা শেষ করতে হবে। অর্থাৎ এই সময়সীমার মধ্যে বিচারের রায় দিতে হবে। বিচারপতিরা রায় দিতে দেরি করতে পারবেন না। কারণ তাহলে দোষীদের সাজা পেতে আরও বেশি দেরি হয়ে যেতে পারে। পার্লামেন্টে এই বিল প্রস্তাবের সময় অমিত শাহ বলেন, ‘এই নতুন আইনের মূল লক্ষ্য হবে দেশের সাধারণ মানুষকে ন্যায় বিচার পাইয়ে দেওয়া।’
next post