নিজস্ব সংবাদদাতা, স্বরূপনগর: আজ, রবিবার স্বরূপনগরের হাকিমপুর রোডে সংবাদ কলকাতা প্রাইভেট লিমিটেড (SAMBAD KOLKATA PVT LTD)-এর রেজিস্টার্ড ঠিকানার ঠিক উল্টোদিকে পিডব্লিউডি-র একটি গাছ কাটা নিয়ে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধে। কোনও অনুমতিপত্র সঙ্গে না নিয়ে এসে একটি বিশালাকার শিশু গাছ কাটতেই খড়্গহস্ত হয়ে ওঠেন স্থানীয় বিথারী-হাকিমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিরা। বিষয়টির তীব্র প্রতিবাদ জানান স্থানীয় তৃণমূল নেতা আনিসউদ্দিন গাজী ও স্বরূপদহ পশ্চিমপাড়ার স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মুজিবর সরদার। গাছটি কাটার পর মোটা গুড়িগুলি ইঞ্জিন ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তখই দেখতে পেয়ে সন্দিহান হয়ে ছুটে আসেন তাঁরা। চুরি করে গাছ কাটা হচ্ছিল বলে তাঁরা সন্দেহ প্রকাশ করেন। পঞ্চায়েত সদস্য মুজিবর সর্দার, হুমায়ুন কবির ও তৃণমূল নেতা আনিস উদ্দিন গাজী এই গাছ কাটার অনুমতিপত্র দেখতে চান ওই ঠিকাদার সংস্থার কর্মীদের কাছে। কিন্তু, তাঁরা দীর্ঘ প্রায় আড়াই ঘন্টার মধ্যে কোনও অনুমতিপত্র দেখাতে পারেননি। উল্টে দাবি করে, অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের অনুমতি সাপেক্ষে এই গাছ কাটা হচ্ছে। তখন পঞ্চায়েত সদস্য মুজিবর সর্দার ও আনিস উদ্দিন গাজী ফের সেই অনুমতির কপি দেখতে চান।
কিন্তু দীর্ঘ আড়াই ঘন্টার মধ্যে কোনও কপি দেখাতে না পারায় তাঁরা সন্দেহ প্রকাশ করেন। এবং অনুমতির কপি না দেখানো পর্যন্ত গাছ রেখে যেতে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি, তাঁরা স্বরূপনগর থানায় ফোন করেন। খবর পেয়ে স্বরূপনগর থানার পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তাঁরা থানার ওসি প্রতাপ মোদকের নির্দেশ মতো কাঠগুলিকে আটক করেন। বিষয়টির সঠিক তদন্ত না হওয়া অবধি কাঠের গুড়িগুলিকে ঘটনাস্থলেই রাখার নির্দেশ দেন। এবং ওই ঠিকাদার সংস্থার প্রধান কর্মীকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। থানার পক্ষ থেকে দেবব্রত দাস বলেন, সাধারণত এইসব গাছ কাটার ওয়ার্ক অর্ডারগুলো বিস্তৃত এলাকা ভিত্তিক হয়ে থাকে। একটি একটি করে জায়গা সব সময় চিহ্নিত হয় না। তবে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব যে এখানে অনুমতি ছাড়া কোনও গাছ কাটা হচ্ছিল কিনা।
এদিকে আনিস উদ্দিন গাজী বলেন, রাস্তার পাশে লাগানো গাছের জমি পিডব্লিউডি-র অধীনে হলেও গাছগুলি বনবিভাগের নিয়ন্ত্রণে। সাধারণত এইসব গাছ মরে গেলে পঞ্চায়েত পিডব্লিউডি-র ইঞ্জিনিয়ারকে আবেদন করলে তারপর গাছগুলি কাটা হয়।
উল্লেখ্য, আজ সাত সকালে স্বরূপদহ পশ্চিমপাড়ায় এসে হাজির হয় একটি ঠিকাদার সংস্থার গাড়ি। প্রায় ৮-১০ জন কর্মী এখানকার ইলেক্ট্রিকের তার খোলা শুরু করে। এমনকি তারা কেবল লাইনের তারও কেটে দেয়। সারাদিন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে গোটা গ্রাম। গরমে বিদ্যুৎ ছাড়া অসুস্থ হয়ে সমস্যায় পড়েন রোগী ও বয়স্করা। এদিকে তার খোলার পর হাই এক্সটেনশন লাইনের পাশে থাকা একটি আধমরা শিশু গাছের ডালপালা কাটা শুরু করে তারা। গোটা গাছটি কেটে গাড়িতে তুলতে দুপুর দুটো বেজে যায়। সেসময় হন্তদন্ত হয়ে ছুটে আসেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মুজিবর সর্দার ও আনিস উদ্দিন গাজী। তারা গাছ কাটার কোনও অনুমতিপত্র না পাওয়ায় গাছ নিয়ে যেতে বাধা দেন।
মুজিবর সরদার বলেন, পঞ্চায়েতের আবেদন সাপেক্ষে গত বছর ১৯ মে দত্তপাড়া বড়পোল সংলগ্ন এলাকায় শুকনো ও মরে যাওয়া গাছ কাটার একটি অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু স্বরূপদহ পশ্চিমপাড়া বা স্বরূপদহ বড়পোলের কোনও গাছ কাটার অর্ডার দেওয়া হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। সেজন্য আমরা বাধা দিয়েছি।