মালদা, ৩১অক্টোবর: শ্বশুরবাড়িতে প্রবেশাধিকার ও স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে দ্বিতীয় স্বামীর বাড়িতে ধরনায় বসলেন এক গৃহবধূ। অবিলম্বে স্বামীর বাড়িতে ঠাঁই না মিললে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন ওই গৃহবধূ। ধরনার টানা দুইদিন কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত স্বামীর বাড়ির তরফ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এমনকি ওই গৃহবধূর দ্বিতীয় স্বামী সহ বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার বাগমারা গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানার বাগমারা গ্রামের বাসিন্দা সাইবা খাতুনের (২৭) প্রথম বিয়ে হয়েছিল রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের চন্ডিপুর এলাকার এক পার্শ্ব শিক্ষকের সঙ্গে। বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যে তাঁর প্রথম স্বামী তাঁকে তালাক দেয়। তারপর সাইবা বাগমারা গ্রামে বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন। সেখানেই বছর তিনেক ধরে গ্রামের যুবক মুজাহিদ আলমের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এমনকি বছর তিনেক আগে তাঁদের দুজনের শরীয়ত মেনে বিয়ে পর্যন্ত হয়। মাস খানেক আগে আইনত রেজিস্ট্রি করে বিয়ে হয় তাঁদের। কিন্তু রেজিস্ট্রি বিয়ের কথা সাইবাকে গোপন রাখতে চাপ দেয় মুজাহিদ। জানা গিয়েছে, মুজাহিদ পূর্ব থেকে বিবাহিত ছিল এবং দুই সন্তান রয়েছে।
এদিকে সাইবার অভিযোগ, পূর্বের শ্বশুরবাড়ি এবং বর্তমানের বাপের বাড়ি থেকে সে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার সম্পত্তি পেয়েছে। সেই সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার জন্যই বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাঁর সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করে মুজাহিদ। এরপর তাঁরা গোপনে বিয়ে করলেও এখনও তাঁকে স্ত্রীর মর্যাদা দিতে নারাজ মুজাহিদ। এমনকি স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে বাড়িতে নিয়ে যেতে বললে তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়। যদিও সাইবা খাতুনের দাবি, বিয়ের সময় তাঁর কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা নিয়েছে মুজাহিদ। তাঁকে গাড়ি পর্যন্ত কিনে দিয়েছে সাইবা। মুজাহিদের ভাই গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটে দাঁড়িয়েছিল। ভোটে লড়ার খরচা বাবদ তিন লক্ষ টাকাও দিয়েছিল সাইবা।
এমতাবস্থায়, শরীয়ত আইন মেনে বিয়ে করলেও মুজাহিদ তাঁকে বাড়ি নিয়ে যেতে নারাজ। তাই বাধ্য হয়ে গতকাল থেকে সে মুজাহিদের বাড়ির সামনে স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে ধরনায় বসে। এদিকে ধরনায় বসার দিন থেকেই বেপাত্তা মুজাহিদ এবং তাঁর বাড়ির লোকজন। এদিকে সাইবার দাবি, যতক্ষণ পর্যন্ত না তাঁকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে মুজাহিদ ঘরে তুলবে, ততক্ষণ সে এই ধরনা চালিয়ে যাবে। কারণ তাঁর বাপের বাড়ির লোকজন তাঁকে ঘরে রাখতে নারাজ। আইন মেনে এই সমস্যার সমাধান না হলে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হবে বলে জানিয়েছে সাইবা।