সংবাদ কলকাতা: ফেসবুকে এক সুন্দরী যুবতীর সঙ্গে আলাপ হয় ফুলবাগানের এক নামী চিকিৎসকের। আর এই পরিচিতি তাঁকে বড় প্রতারণার ফাঁদে ফেলে দিল। হানিট্যাপের মতো অপার প্রান্ত থেকে সেই সুন্দরী যুবতীও ডাক্তারের আবেদনে সাড়া দেয়। এরপর সেই যুবতীর হোয়াটসআপ নাম্বার চায় ডাক্তার। তরুণীও কোনও ওজর আপত্তি না করে দিয়ে দেয় হোয়াটস্যাপ নাম্বার। এরপর শুরু হয় দুজনের সেক্স চ্যাট। একে অপরে নগ্ন ছবি আদান প্রদান করে। এমনকি তরুণীর প্রস্তাবে সায় দিয়ে ভিডিও কল করে বিপদে পড়ে যান ওই নামী চিকিৎসক। আসলে অন্য প্রান্তে যে সুন্দরী যুবতী সেজে সেক্স চ্যাট করছে, সে যে আসলে একজন পুরুষ প্রতারক। পুরোটাই একটি পাতা ফাঁদ। ফেসবুকে সুন্দরী যুবতীর ছবি দেখে সেই ফাঁদে পা দিয়েছেন ওই চিকিৎসক। ভিডিও কল করার সময় অপার প্রান্ত থেকে ওই চিকিৎসকের নগ্ন ভিডিও ও ছবি তুলে রেখেছে তাঁকে ফাঁদে ফেলার জন্য। এরপর শুরু হয় ব্ল্যাকমেল।
ওই চিকিৎসকের নামে ভুয়ো ফেসবুক একাউন্ট খুলে সেই নগ্ন ছবি শেয়ার করা হয় সোশ্যাল সাইটে। এরপর প্রতারকরা অন্য নাম্বার দিয়ে পুলিশ সেজে ফোন করে। অভিযোগ করা হয়, ফেসবুক প্রোফাইল থেকে তিনি বিভিন্ন লোককে নগ্ন ছবি পাঠাচ্ছেন। এজন্য তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। ফেসবুক পেজে নিজের সেইসব ব্যক্তিগত ছবি দেখে ভয় পেয়ে যান চিকিৎসক। তিনি বিষয়টি থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য সেই ভুয়ো পুলিশকে ফোনে অনুরোধ করেন। প্রতারকরা সুযোগ বুঝে মোটা টাকা দাবি করে। কয়েক দফায় প্রায় ১১ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় ওই চিকিৎসকের কাছ থেকে। এজন্য দুটি ব্যাঙ্ক একাউন্ট নাম্বার দেয় অভিযুক্তরা।
ঘটনাটি গত বছর সেপ্টেম্বর মাসের। এত টাকা নিয়েও রেহাই পাননি ওই নামি চিকিৎসক। ফের টাকা চেয়ে ফোন আসে। তখন সন্দেহ হতেই লালবাজার সাইবার ক্রাইম থানার দ্বারস্থ হন তিনি। সাইবার ক্রাইম থানা বিষয়টির তদন্তে নামে। অবশেষে গত শনিবার দিল্লি থেকে চক্রের মূল পান্ডাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতের নাম কারেন রাস্তোগি। ব্যাঙ্ক একাউন্ট-এর সূত্র ধরেই গ্রেপ্তার করা হয় তাকে।
তবে ঘটনার মূল পান্ডা এখনও গ্রেপ্তার হয়নি। কারণ, এই চক্রে কারেন কমিশনের বিনিময়ে তার ব্যাঙ্ক একাউন্ট ভাড়া দেয়। টাকা জমা পড়ার পর নিজের কমিশন রেখে বাকি টাকা চক্রের অন্যান্যদের কাছে পৌঁছে দিত সে। অপরাধীরা দিল্লিতে বসে সারা দেশে এই ধরণের প্রতারণা চালিয়ে যায়। সুন্দরী যুবতীর ছদ্মবেশে সমাজের সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিদের নগ্ন ছবি তুলে ব্ল্যাকমেল করে তারা। তদন্তে জানা গিয়েছে, কারেনের এক আত্মীয় এই প্রতারণা চক্রে জড়িত। তদন্তকারীরা তাকে জেরা করে এই চক্রের বাকিদের হদিশ পেতে চাইছে।
previous post