দক্ষিণ ২৪ পরগনা: “কথায় রয়েছে নদীর ধারে বাস, তার ভাবনা বারো মাস” । সুন্দরবনের উপকূল তীরবর্তী এলাকার মানুষজনের ক্ষেত্রে এই প্রবাদ যেন অক্ষরে অক্ষরে মিলে যায়। বারেবারেই পূর্ণিমা ও অমাবস্যার ভরা কোটালের জেরে নদী বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় গোটা এলাকা। নষ্ট হয়ে যায় একের পর এক চাষের জমি । এই পরিস্থিতিতে কার্যত নিরুপায় হয়ে থাকে সুন্দরবনের উপকূল তীরবর্তী এলাকার মানুষজনরা। প্রশাসনের তরফ থেকে স্থায়ী কংক্রিটের নদী বাঁধ করার প্রতিশ্রুতি তো থাকেই । তবে বছরের পর বছর কেটে গেলেও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ হয়না।
সম্প্রতি নিম্নচাপ ও কোটালে জোড়া ফলায় বেশ কয়েকদিন আগে সুন্দরবনের একাধিক জায়গায় নদী বাঁধ ভেঙে নোনা জল গ্রামের মধ্যে ঢুকে গিয়েছে। বহু জায়গায় প্রশাসনের ওপর আস্থা ভরসা নারেখে গ্রামবাসীরা নিজেদের উদ্যোগেই নদী বাঁধ মেরামতিতে হাত লাগিয়েছিল । বহু জায়গায় গ্রামবাসীরা চাঁদা তুলে নদী বাঁধ মেরামতির কাজও করছে । একথা শোনা মাত্রই রাজ্যের সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী তথা সাগর বিধানসভার বিধায়ক বঙ্কিম হাজরার নির্দেশে ও রাজ্যের সেচ দপ্তরের সহযোগিতায় শুরু হয়েছে নদী বাঁধ মেরামতির কাজ। সাগর , নামখানা , বকখালি মৌসুনি দ্বীপ ও গোসাবার একাধিক নদী বাঁধের কাজ শুরু করেছে রাজ্যের সেচ দপ্তর। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে সেই নদীবাঁধ মেরামতির কাজ।
সামনেই আবার অমাবস্যার ভরা কোটাল রয়েছে। অমাবস্যার ভরা কোটালের আগেই নদী বাঁধের কাজ সম্পন্ন করতে চায় সেচ দপ্তর। এ বিষয়ে সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা জানান, পূর্ণিমার ভরা কোটালের জেরে সুন্দরবনের একাধিক জায়গায় নদীর জলস্ফীতি বেড়ে গিয়েছিল । বহু জায়গায় নদী বাঁধ ভেঙে গ্রামের মধ্যে নদীর নোনা জল ঢুকে গিয়েছিল। একাধিক জায়গায় গ্রামবাসীরা নিজেদের উদ্যোগে নদী বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু করে দিয়েছিল । সে কথা কানে আসতেই দ্রুততার সাথে সেই সকল বেহাল নদীবাঁধ গুলি মেরামতির কাজ শুরু করে দেওয়া হয়েছে । অমাবস্যার কোটালের আগে নদীবাঁধের অধিকাংশ কাজ সুসম্পন্ন হয়ে যাবে। নদী বাঁধের কাজ শুরু হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবে কিছুটা হলেও খুশি সুন্দরবনের উপকূল তীরবর্তী এলাকার মানুষজন।