নভেম্বর মাসের শেষে আসানসোলের সেনরেল রোডের সৃষ্টিনগরে আন্তঃরাজ্য রেলে চাকরি দেওয়ার নামে একটি প্রতারণা ও জালিয়াতি চক্রের হদিশ পেয়েছিলো আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ। সেই মামলার তদন্তে নেমে সোমবার উত্তরপ্রদেশের লখনউ থেকে সেই চক্রের আরো দুজনকে গ্রেফতার করলো আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ। ধৃতরা হলো আসানসোল দক্ষিণ থানার ডুরান্ড কলোনির দিনেশ কুমার ও সুকান্তপল্লীর প্রীতি অরোরা ওরফে সীমা শর্মা। ধৃতরা সম্পর্কে স্বামী ও স্ত্রী বলে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। মঙ্গলবার সকালে তাদেরকে ট্রানজিট রিমান্ডে উত্তরপ্রদেশ থেকে আসানসোল নিয়ে আসা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি ( সেন্ট্রাল) ধ্রুব দাস জানিয়েছেন, বুধবার তাদের আসানসোল আদালতে তোলা হবে। এই মামলার আরো তদন্তে দুজনকে জেরা করার জন্য আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করবে।
জানা গেছে, আসানসোলের বাসিন্দা দীনেশ কুমার তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে উত্তরপ্রদেশের লখনউ জেলার আশিয়ানা থানার আশিয়ানর এমআই ব্লকের তেরাঙ্গা মোড়ে একটি ভাড়াবাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন। তাঁদের খবর আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ গোপন সূত্রে পায়। এরপর আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশের একটি বিশেষ দল গত ২১ ডিসেম্বর লক্ষৌতে পৌঁছায়। সেখানে আশিয়ান থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ আশিয়ানায় দীনেশ কুমারের ভাড়া বাড়ি থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে।
ধৃতদের বিরুদ্ধে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ (কেস নং ৪৩২/২৪ তারিখ ৩০.১১.২৪) বিএনএস বা ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৩১৯(২), ৩১৮(৪), ৩১৬(২), ৩৩৮, ৩৩৬(৩), ৩৪০(২) ও ৬১(২) নং ধারায় রেলওয়ে চাকরি জালিয়াতির মামলা করেছে।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ নভেম্বর নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ আসানসোলের সেনরেল রোডে সৃষ্টিনগরে হানা দিয়েছিলো। সেখানে একটি ভাড়া নেওয়া আবাসন থেকে বিহারের আড়া জেলার বাসিন্দা হরিন্দ্রর সিংকে গ্রেপ্তার করে। সেই আবাসন ও পাশের ভাড়া নেওয়া আরো একটি আবাসনে তল্লাশি করে পুলিশ প্রচুর পরিমাণে নথি পায়। তার থেকে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে, আসানসোল থেকে এই রেলে চাকরি দেওয়ার নামে আন্তঃরাজ্য প্রতারণা ও জালিয়াতি চক্র চালানো হচ্ছিল। নথির মধ্যে রেলের অফিস ও হাসপাতালের অনেক জাল কাগজ ও রাবার স্ট্যাম্প ছিলো। ছিলো রেলের পরীক্ষা সংক্রান্ত অনেক কাগজ। পুলিশ ওই আবাসন এলাকা থেকে আসানসোল দক্ষিণ থানার দুর্গামন্দির এলাকার বাসিন্দা অটো
চালক অবধেশ যাদবকে গ্রেফতার করে। জেরা করে পুলিশ জানতে
পারে চক্রের জাল অনেক রাজ্যে ছড়িয়ে আছে।