November 1, 2025
উত্তর সম্পাদকীয় রাজ্য

রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসার জন্য প্রকারান্তরে মমতাকেই দায়ী করলেন রাজীব সিনহা

সুভাষ পাল ও সুমন মল্লিক: রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিরোধী ও শাসক দলের মোট ১৭ জনের মৃত্যু ঘটেছে। বিরোধীরা আগেই বলেছেন এটা কোন গণতন্ত্রের নমুনা নয় এটা প্রহসন মাত্র। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই নির্বাচন কে গণতন্ত্রের নয় রাক্ষসতন্ত্রের নমুনা বলেছেন। ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঘোষণা থেকে পরবর্তী সময়ে প্রতিটি পদক্ষেপে রাজনৈতিক হিংসা রাজ্য তথা দেশের সমস্ত রেকর্ডকে ছাপিয়ে গিয়েছে।পশ্চিমবঙ্গের ৪৫ বছরের পঞ্চায়েতি রাজের সবচেয়ে নৃশংস ও ঘৃণ্যতম ঘটনা২০২৩ সালের পঞ্চায়েত।

এদিকে, রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে লাগামহীন সন্ত্রাসের জন্য এবার মমতা ব্যানার্জিকেই কাঠগড়ায় তুললেন রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা। তিনি বলেন, আইন শৃঙ্খলা রাজ্য পুলিশের বিষয়।আমরা যেমন খবর পাই, সেভাবেই বাহিনীকে নির্দেশ দিই বা পদক্ষেপ গ্রহণ করি। তার এই বক্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ তিনি যে রাজ্য পুলিশকে দায়ী করেছেন সেই রাজ্য পুলিশ তথা রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তরকে নিয়ন্ত্রণ করেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি শুধু মুখ্যমন্ত্রী নন, একাধারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা পুলিশমন্ত্রী। অতএব, রাজ্যের গোটা পুলিশ বিভাগ কোন অপরাধ বা কর্তব্যে গাফিলতি করলে তার দায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিতে হবে। কারণ, পুলিশ মন্ত্রীর নির্দেশ ছাড়া গোটা রাজ্যে এত বড় সংগঠিত অপরাধ হওয়া সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশনের ঘাড়ে এই অপরাধের দায় চাপিয়ে হয়তো সংবিধানের ফাঁক গলে বেরিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু বাস্তবকে অস্বীকার করা যায় না। পঞ্চায়েত নির্বাচনে কমিশন যে ভোট পরিচালনা করে তার আপাত মস্তক পরিকাঠামো রাজ্য প্রশাসনের নখদর্পনে থাকে।রাজ্য নির্বাচন কমিশনার এখানে মুখ্যমন্ত্রীর হাতের পুতুল মাত্র। বাইরে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে একটি স্বতন্ত্র সংস্থা দেখানো হলেও জনতার চোখের আড়াল থেকে কার্যত এই সংস্থা রাজ্যের শাসক দলের ইশারায় চলে। ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে কমিশনের ভূমিকা কার্যত সেই দিকেই অঙ্গুলি নির্দেশ করেছে।

Related posts

Leave a Comment