সুভাষ পাল, সংবাদ কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোটের ঘোষণার পর থেকে ভোট গণনার পরবর্তী সময়েও রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের লাগামহীন সন্ত্রাস। তাঁর প্রতিবাদে বিজেপির মহামিছিল। কলকাতার রাজপথে এই মিছিলে অংশগ্রহণ করেছেন কয়েক লক্ষ প্রতিবাদী মানুষ। তাঁরা প্রত্যেকেই মমতা সরকারের উৎখাতের দাবি জানিয়ে এই মিছিলে অংশগ্রহণ করেছেন। শুধু তাই নয়, ভোটে নির্বাচন কমিশন ও সরকারি আধিকারিকদের সহযোগিতায় দেদার ছাপ্পা ও কারচুপির অভিযোগ এনেছে বিরোধী দল। আজ সেই প্রতিবাদে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি সত্যিই চোখে পড়ার মতো। মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্বরা। ছিলেন দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা, রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা।
উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত প্রায় ৫৮ জন মানুষ খুন হয়েছেন। যার মধ্যে বিজেপির ১১ জন নেতা ও কর্মী রয়েছেন। রাজ্যজুড়ে তৃণমূলী সন্ত্রাস এখনও অব্যাহত। জেলায় জেলায় নেতা ও কর্মী সমর্থকদের বাড়িঘর ভাঙচুর, এমনকি আগুন লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ভাঙচুর করা হচ্ছে তাঁদের দোকানপাঠ। লুঠ করা হচ্ছে জিনিসপত্র। এমনকি যখন তখন বিজেপি কর্মীদের উপর আক্রমণ অব্যাহত। তাঁদেরকে বেধড়ক মারধর করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে জখম হয়েছে কয়েকশো রাজনৈতিক কর্মী ও সমর্থক। সব মিলিয়ে রাজ্যজুড়ে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি! রাজ্যে নেমে এসেছে এক গণতান্ত্রিক বিপর্যয়। গত ৪ দশকে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখেনি রাজ্যের মানুষ। মমতা সরকারের আমলের এই ঘটনা ৭০-এর দশকে কংগ্রেসের আমলে সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের জমানাকে মনে করিয়ে দেয়।
আজ এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে মমতা সরকারের উৎখাতের দাবিতে রাজপথে নেমেছে বিজেপি। ভোট গণনায় কারচুপি নিয়ে নির্বাচন কমিশন, বিডিও, রাজ্য পুলিশ ও থানার ওসি-র বিরুদ্ধে পথে নেমেছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল। এইসব সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের হয়ে কাজ করার অভিযোগ এনেছেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এদিকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছেন, ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল ত্রিস্তরীয় ভোট লুঠ করেছে। প্রথম স্তরে মনোনয়নের সময় বিরোধী প্রার্থীদের নথি পরিবর্তন করে ও ভয় দেখিয়ে। দ্বিতীয় স্তরে দেদার ছাপ্পা দিয়ে। এবং তৃতীয় স্তরে দলদাস সরকারি আধিকারিকদের কাজে লাগিয়ে এই ভোট লুঠ করেছে তারা। আর এর প্রতিবাদেই মমতা সরকারকে উৎখাতের দাবি জানিয়ে কলকাতার রাজপথে বিজেপির মহামিছিল। রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে সামিল হয়েছেন দলের নেতা, কর্মী ও সমর্থকরা। বিজেপির এই প্রতিবাদী মিছিলে শহর কার্যত অবরুদ্ধ।
আজকের এই মিছিলে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তৃণমূলের শহীদ দিবসে আরও একটি আন্দোলনের ঘোষণা করেছেন। আগামী ২১ জুলাই রাজ্যের প্রত্যেকটি ব্লকে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা বিক্ষোভ আন্দোলনে অংশ নেবেন বলে তিনি জানিয়েছেন। ফলে এবারের ২১ জুলাই তৃণমূলের কাছে খুব মসৃণ কার্যক্রম হবে বলে মনে হয় না।