বিশেষ সংবাদদাতা, রাজারহাট: রাজ্যজুড়ে ভোট লুটের অভিযোগ শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পঞ্চায়েত ভোট থেকে এপর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৪০ জনের ওপর। এবার গণনায় কারচুপির অভিযোগে শুরু হয়েছে একের পর এক সংঘর্ষ ও অশান্তি। রাজারহাট নিয়েও একই অভিযোগ রয়েছে। মঙ্গলবার এখনকার শিক্ষা নিকেতনে পাঁচটি পঞ্চায়েতের গণনা শুরু হয় একটু দেরিতে। সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ প্রথম রাউন্ডের গণনা শুরু হয়। রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ, প্রশাসনের গাফিলতির জন্যই এই বিলম্ব। গণনা শুরু হওয়ার পর তৃণমূলের জয়লাভ শুরু হয়। একের পর এক বুথের ফলাফল নিজেদের ঝুলিতে ভরে ফেলে। দুপুরের মধ্যেই রাজারহাটের ফলাফল স্পষ্ট হয়ে যায়। রাজারহাট-বিষ্ণুপুর ১ ও ২ নম্বর, জ্যাংড়া-হাতিয়ারা ২ নম্বর, এবং পাথরঘাটা পঞ্চায়েতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে শাসকদল তৃণমূল। জানা গিয়েছে, রাজারহাট-বিষ্ণুপুর ১, জ্যাংড়া-হাতিয়ারা ২ ও পাথরঘাটা পঞ্চায়েতে সবচেয়ে ভালো ফল করেছে তৃণমূল। এই ব্যাপারে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি প্রবীর কর বলেন, এই জয় উন্নয়নের জয়। মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে রয়েছেন। এই ফলাফল তারই প্রমাণ।
অন্যদিকে, চারটি পঞ্চায়েতে গরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পারলেও দিনভর শাসকদলকে চাপে রাখল চাঁদপুর পঞ্চায়েত। সকাল থেকে সমানে সমানে ‘টক্কর’ দিয়েছে বিরোধীরা। এই পঞ্চায়েতে মোট ৩০টি আসনে ভোট হয়। শেষ রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে, অর্ধেক আসনে জয়লাভ করেছে ঘাসফুল শিবির। বাকি ১৫টি আসনে বিরোধী প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। যদিও এই পঞ্চায়েতের চূড়ান্ত ফলাফল সন্ধ্যা পর্যন্ত বিডিও অফিস থেকে জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, রাজারহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন ১৪৪টি। তার মধ্যে ঘাসফুলের দখলে রয়েছে ১১৪টি। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাম শিবির। বামেরা রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলকে এই ভোটে পিছনে ফেলে দিয়েছে। তারা দখল করেছে মোট ১৩টি আসন। বিজেপি পেয়েছে ১২টি আসন। অন্যদিকে, কংগ্রেস ২টি ও আইএসএফ ৩টি আসনে জয়লাভ করেছে। এই ফলাফল প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, গ্রামবাংলায় যেখানে অবাধে মানুষ ভোট দিতে পেরেছেন, সেখানে বিজেপি ভালো ফল করেছে। বেশিরভাগ জায়গাতেই ভোট লুট করে তৃণমূল পঞ্চায়েত দখল করেছে। সিপিএম নেতা সপ্তর্ষি দেবের কথায়, আমাদের ফল তুলনামূলকভাবে ভালো হয়েছে। নিউটাউনের মানুষকে ভোট দিতে দিলে ওই পঞ্চায়েতও আমাদের দখলে থাকত। অন্যায়ভাবে মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে শাসকদল।
previous post