28 C
Kolkata
August 3, 2025
রাজ্য

রাজভবনে বাংলা ভাষায় হাতে খড়ি হল আনন্দের, তাল কাটল “জয় বাংলা” উচ্চারণে

সংবাদ কলকাতা: শপথ নেওয়ার সময় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বাংলার প্রতি তাঁর ভালোবাসার কথা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি সেদিন বাংলা ভাষা শেখার আগ্রহ প্রকাশ করছিলেন। বৃহস্পতিবার সরস্বতী পূজা উপলক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে সেই বাংলা ভাষা শেখা শুরু করে নিজের কথা রাখলেন।

প্রসঙ্গত এদিন রাজভবনেই আয়োজন করা হয় একটি ‘হাতে খড়ি’ অনুষ্ঠানের। সেই অনুষ্ঠানে তিনি একজন শিশু কন্যাকে গুরু মেনে তার হাত ধরে হাতে খড়ি দিলেন। শিশুটি রাজ্যপালের হাত ধরে একটি ব্ল্যাকবোর্ডে প্রথমে ‘অ’ লিখে বলল ‘দিজ ইজ অ’। রাজ্যপাল মেয়েটির কথা মতো বললেন, ‘অ’। এরপর মেয়েটি সেই অ-এ একটি আ-কার মাত্রা দিয়ে বলল ‘দিজ ইজ আ’। মেয়েটির নির্দেশ মতো রাজ্যপাল বললেন, ‘আ’। এভাবে তাঁর হাতে খড়ি সম্পূর্ণ হল। এরপর ওই শিশু কন্যা দীয়াসিনী রায়কে গুরুদক্ষিণা দিলেন রাজ্যপাল।

এখানেই শেষ নয়, তিনি হাতে খড়ির মাধ্যমে বর্ণ পরিচয়ের পাশাপাশি বাংলা ভাষা শেখাও শুরু করেন। এদিন রঞ্জনা আর শুভজিৎ নামে আরও দুই শিশু রাজ্যপালকে বাংলা ভাষা শেখানো শুরু করে। সুর করে সেই দুই শিশু বলে, ‘‘মাদার মানে মা। আর্থ মানে ভূমি।’’ রাজ্যপাল তাদের নির্দেশ মতো সেই ‘মা’ ও ‘ভূমি’ শব্দ দুটি উচ্চারণের মাধ্যমে বাংলা ভাষার পাঠ নেওয়ার আনুষ্ঠানিক সূচনা করলেন। এরপর এই দুই শিশুকেও গুরুদক্ষিণা দেন রাজ্যপাল।

এরপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঞ্চে এসে রাজ্যপালের হাতে একটি বর্ণ পরিচয়ের বই তুলে দেন। মমতা বলেন, ‘‘১৯৪০-এ মহাত্মা গান্ধী বাংলা শেখা শুরু করেছিলেন। প্রাক্তন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধীও বাংলায় আগ্রহী ছিলেন। ওঁকে কিছু বললে উনি বাংলায় জবাব দিতেন।’’
মমতা বলেন, এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাষা হল বাংলা। তা সত্ত্বেও আমরা অন্য ভাষা শিখতে চাই। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সব ভাষা শিখতে চাই। ভারত আমাদের মাতৃভূমি, সেখানে বিভেদের মধ্যে ঐক্য বড় কথা। তামিলদের নিজস্ব ভাষা, পঞ্জাবিদের নিজস্ব ভাষা। দার্জিলিঙেরও নিজস্ব ভাষা রয়েছে। এমনকি পশ্চিমবঙ্গেও অনেক ভাষা রয়েছে। বাংলাও ঐক্যবদ্ধ ভারতেরই মতো। আমি মনে করি, যেখানেই যাই, স্থানীয় ভাষা শেখা উচিত।’’

এদিনের অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল মমতার সঙ্গে সহমত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি বাংলা শিখব। বাংলা সুন্দর ভাষা। আমি বাংলাকে ভালবাসি। আমি বাংলার মানুষকে ভালবাসি। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস আমার নায়ক। জয় বাংলা, জয় হিন্দ।’’

কিন্তু, অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক মাত্রা নেয় রাজ্যপালের ‘জয় বাংলা’ উচ্চারণে। কারণ এটি বাংলাদেশের স্লোগান। যার প্রচলন করেছিলেন শেখ মুজিবর রহমান ও তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা। এপ্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাঁর মন্তব্যের বিরোধিতা করে বলেন, রাজ্যপালকে এই বক্তৃতা লিখে দেওয়া হয়েছে। এবিষয়ে তাঁর কোনও ভুল নেই। শুভেন্দু এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থাকলেও উপস্থিত ছিলেন বিজেপি-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা মেঘালয় ও ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায়। তিনি এই বিষয়টির সমালোচনা করেন।

Related posts

Leave a Comment