মালদা: পরপর তিন কন্যা সন্তান হওয়ায় গৃহবধূ ও তার তিন কন্যা সন্তানকে কীটনাশক খাইয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। যদিও অভিযোগ মিথ্যে বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত স্বামী। রবিবার রাতে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে মালদা জেলার গাজোল থানার গোসানিবাগ এলাকায়। গৃহবধূ ও তার এক মেয়ে চিকিৎসাধীন মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। বাকি দুই মেয়ে সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে আপাতত সুস্থ রয়েছে বলে পরিবার সূত্রে খবর।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদা জেলার গাজোল থানার আলতোর গ্রামের যুবতী অর্পিতা মন্ডলের বয়স ৩২ বছর। গাজোল থানার গোসানিবাগ এলাকার দীপক মন্ডলের সঙ্গে ভালোবাসা করে বিগত ১২ বছর আগে তাঁরা বিবাহ করেন। বিয়ের পরে পরপর তিন কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ওই গৃহবধূ। তারপর থেকেই অত্যাচার বেড়ে যায় ওই গৃহবধুর ওপর বলে আহত গৃহবধুর পরিবারের সদস্যদের দাবি। এই নিয়ে একাধিকবার গৃহবধূকে মারধোর ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। গতকাল রাতে গৃহবধূ ও তাঁর তিন কন্যা সন্তানকে কীটনাশক খাওয়ানোর চেষ্টা করে অভিযুক্ত স্বামী। অভিযুক্ত স্বামী এক মেয়ে ও তার স্ত্রীকে যখন কীটনাশক খাওয়ায়, তখন দুই কন্যা সন্তান সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে গ্রামবাসীদের বিষয়টি জানায়। গ্রামবাসীরা তড়িঘড়ি ছুটে এসে আশঙ্কাজনক অবস্থায় এক কন্যা ও গৃহবধূকে তড়িঘড়ি উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে অবস্থার অবনতি হলে রাতেই মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজনকে ভর্তি করে। বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই গৃহবধূ ও তাঁর এক মেয়ে।
এই বিষয়ে গাজোল থানায় অভিযুক্ত স্বামীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন আহত গৃহবধূর পরিবারের সদস্যরা। আক্রান্ত গৃহবধুর বাবা গণেশ মণ্ডলের দাবি, পরপর তিন কন্যা সন্তান হওয়ায় তাঁর মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরে অত্যাচার করে চলেছে তার জামাই। গতকাল রাতে আমার মেয়ে এবং তিন নাতনিকে কীটনাশক খাইয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। সেই সময় দুই নাতনি সেখান থেকে পালিয়ে গ্রামবাসীদেরকে বিষয়টি জানায়। বর্তমানে এক নাতনি ও আমার মেয়ে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। আহত গৃহবধূর মা মালতি মন্ডলের দাবি, তাদের জামাই মেয়ের পর পর তিন কন্যা সন্তান হওয়ার জন্য কীটনাশক খাইয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। আমরা অভিযুক্ত জামাই-এর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। তার উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করছি।
অন্যদিকে অভিযুক্ত গৃহবধুর স্বামী দীপক মন্ডলের অভিযোগ, স্থানীয় এক সিভিক ভলান্টিয়ারের সঙ্গে আমার স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। সেই বিষয়টি জানাজানি হতেই আমার স্ত্রী ও আমার মেয়েদেরকে কীটনাশক খাইয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে আমার শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে গাজোল থানার পুলিশ।
previous post
next post