কুমার বিক্রমাদিত্য, কলকাতা: অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে মন্ত্রী করার ব্যাপারে অনেক আগে থেকেই টার্গেট করে রেখেছেন মোদী, অমিত শাহরা। বিশেষ করে নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকারের ভিত নাড়িয়ে দেওয়ার মতো অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের যুগান্তকারী রায় শুধু রাজ্য নয়, দেশজুড়ে আলোড়ন তুলে দেয়। রাজনৈতিক মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে মমতা সরকারের নিয়োগ দুর্নীতি এবং রাজ্যের উচ্চ আদালতে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ের প্রসঙ্গ। তাঁর রায়ের ফলে রাজ্যের বেকার যুব সমাজকে প্রতিবাদী আন্দোলনে নতুন করে অক্সিজেন জুগিয়েছে। আর সেই সময় থেকেই রাজ্যের ক্ষমতা দখলের নতুন মুখ হিসেবে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের আলোচনায় উঠে আসে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম। নিপাট সাদা-মাঠা ও সাহসী এই তৎকালীন বিচারপতিকে তখন থেকেই টার্গেট করেন বিজেপি নেতারা।
সূত্রের খবর, লোকসভা ভোটে প্রার্থী করার আগে থেকেই তাঁকে প্রথমে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করার লক্ষ্য ছিল বিজেপি-র। তিনি ভোটে জিতুন বা নাই জিতুন মন্ত্রী হবেনই। প্রয়োজনে রাজ্যসভার সদস্য করেও তাঁকে মন্ত্রী করা হতে পারে। এমনই পরিকল্পনা নেয় বিজেপি-র শীর্ষ নেতারা। তাঁকে আইন মন্ত্রী বা গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীও করা হতে পারে। এমনও জল্পনা চলছে বলে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে প্রথম লক্ষ্য, সরাসরি মানুষ সুবিধা পান এমন কোনও দপ্তর দেওয়া হতে পারে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে।
বিজেপি নেতাদের মতে, তাঁকে মন্ত্রী করার ক্ষেত্রে কোনও সংসদীয় অভিজ্ঞতা না থাকলেও চলবে। কারণ তিনি বিচারপতির মতো গুরু দায়িত্ব সামলে এসেছেন দীর্ঘদিন। তিনি আইন বিশেষজ্ঞ। প্রশাসনিক বিষয়ে তাঁর সম্যক জ্ঞান রয়েছে। যাতে ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের আগেই রাজ্যের মানুষের মন জয় করে নিতে পারেন। এরপর ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে মমতার বিরুদ্ধে গেরুয়া শিবিরের মুখ্যমন্ত্রীর মুখ করে ভোটের ময়দানে নামিয়ে দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যে গতকাল দিল্লিতে রওনা দেন হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ও তমলুকের বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আজ শুক্রবার দলের সমস্ত বিজয়ী সাংসদদের নিয়ে বৈঠক রয়েছে রাজধানীতে। সেখানে ঠিক করা হবে, বিজেপি আগামীতে কী রণকৌশল নেবে। কী কী কাজ করবে। আর এই বৈঠকেই আজ নির্ধারণ হয়ে যেতে পারে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মন্ত্রী হচ্ছেন কিনা। তাঁর সঙ্গে রাজ্যে আর কে কে মন্ত্রী হতে পারেন সেটাও নির্ধারণ করা হবে বলে দলীয় সূত্রের খবর।