ভাগলপুর, ৫ জুন: ফের মুখ পুড়ল বিহারের নীতীশ কুমার সরকারের। রবিবার ভাগলপুরে ভেঙে পড়ল একটি নির্মীয়মাণ সেতু। লোকসভা ভোটে মোদী সরকারকে হঠাতে বিরোধী জোট গঠনের যাঁরা তোড়জোড় করছেন, নীতিশ কুমার তাঁদের অন্যতম কান্ডারি। কিন্তু এই সেতু ভেঙে পড়া নিয়ে নীতীশ কুমারের সরকারের দায়িত্ববোধ নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। এর ফলে জোট রাজনীতিতে সর্বভারতীয় স্তরে জোর ধাক্কা খেলেন তিনি। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি একটি সর্বভারতীয় জোট বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। আর ঠিক সেই মুহূর্তে ভেঙে পড়ল একটি বড় মাপের নির্মীয়মাণ সেতু। তবে এই সেতু ভেঙে পড়া এটাই প্রথম নয়। এর আগেও ১৭১০ কোটি টাকা ব্যয়ের এই সেতুটি ভেঙে পড়ে। একই বছরে দুইবার এই ঘটনা ঘটল।
জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালে বিহারের খাগরিয়া জেলার পারভাট্টা থানা এলাকায় চার লেনের এই সেতুর শিলান্যাস করা হয়। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার সেই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সেতুর নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের দিকে। গতকাল রবিবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ সুলতানগঞ্জ ও খাগারিয়া জেলার মধ্যে সংযোগকারী সেই আস্ত সেতুটি গঙ্গাবক্ষে ধূলিসাৎ হয়ে যায়। আগুয়ানিঘাট- সুলতানগঞ্জ সেতুটি খাগারিয়া জেলার সঙ্গে ভাগলপুর জেলাকে সঙ্গে সংযোগ গড়ে তুলত।
দুই দুর্ঘটনার পর, সেতুটির গুণমান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ভাগলপুরের জেলাশাসক কুমার অনুরাগ বলেছেন, “৯ নম্বর স্তম্ভ এবং ১৩ নম্বর স্তম্ভের মধ্যে সেতুর স্ল্যাব ধসে পড়েছে। আমরা কোনও ধরনের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাইনি। ধসের কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে।” এই দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে সুলতানগঞ্জের বিধায়ক ললিত কুমার মন্ডল বলেছেন, “বড় গাফিলতির জন্য়ই এটা ঘটল। এই ঘটনার বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত করা হবে এবং দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে।” জেডিইউ বিধায়ক আরও জানিয়েছেন, এদিনের ঘটনার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে জানানো হয়েছে। অবিলম্বে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করা হবে। তিনি বলেন, “মনে হচ্ছে নির্মাণের জন্য নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে সেতুটির একটি অংশ ভেঙে পড়ে। পরে পুরো সেতুটিই ভেঙে নদীতে তলিয়ে যায়। যদিও এই দুর্ঘটনায় কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে বেগুসরাই জেলায় একই ঘটনা ঘটে। সেখানে একটি সেতু দু’টুকরো হয়ে বুড়ি গন্ডক নদীতে পড়ে। সব মিলিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে চাপের মুখে নীতীশ কুমার।