শঙ্কর মণ্ডল: বোমা আমাদের ভিত্তি, আর লুঠ আমাদের ভবিষ্যত। এটাই তৃণমূলের স্লোগান। আর তাই স্বাভাবিকভাবেই ১২ শতাংশ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের পরেও কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ অর্থাৎ সর্বত্রই এখন বোমা শিল্পের রমরমা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হল এই বোমা শিল্পের দৌরাত্ম্যের কারণে বারবার শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে। যা তালিবানী সাম্রাজ্যেও এত বিপুল পরিমাণে শিশুরা আক্রান্ত হয় না। পঞ্চায়েত নির্বাচন হল গ্রামের সরকার তৈরির নির্বাচন। গ্রামের মানুষ তার ক্ষমতা প্রদান করবে। সাধারণ মানুষের দিন প্রতিদিনের উন্নয়নের কাজ করার জন্য। কিন্তু বর্তমান পশ্চিমবঙ্গে যেহেতু কোনও কাজ নেই, সেহেতু এই পঞ্চায়েতের মাধ্যমেই সরকারী টাকা লুঠ করার একটা নিশ্চিন্ত জায়গায় পরিণত হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী গ্রামের মানুষের নিরাপত্তা কতটা দেবে জানি না। এর আগের অভিজ্ঞতা আমাদের আছে।
২০১৩ সালে মীরা পাণ্ডের কাজ নিয়ে প্রচুর আলোচনা হচ্ছে। হ্যাঁ, নিঃসন্দেহে বলতে পারি, তাঁর বেশ কিছু পদক্ষেপ প্রশংসার দাবি রাখে। কিন্তু, যাঁদের স্মৃতি অত্যন্ত প্রখর বা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে যদি তাঁদের পুরনো রেকর্ড খুঁজে বার করেন, তাহলে দেখতে পাবেন ঐ সময়েও বিশেষ করে শেষের দিকে ব্যাপক ভোট লুঠ হয়। এবং মীরা পাণ্ডেও সেই ভোটকে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট বলে উল্লেখ করেন।
যাই হোক, আজ এই রাজ্যের কংগ্রেস, সিপিএমের নিচুতলার কর্মীরা আন্তরিকভাবে তৃণমূল বিরোধিতা করছে, আক্রান্ত হচ্ছে, মারাও যাচ্ছে। কিন্তু কাদের জন্য এই ঝুঁকি নিয়ে রাজনীতি করছেন? অধীর চৌধুরী, সুজন চক্রবর্তীরা যতই চিৎকার করে মুখে তৃণমূল বিরোধীতা দেখান না কেন, আসলে এই রাজ্যে আগামী দিনে তৃণমূলকে জয়লাভ করাতেই তারা সচেষ্ট। নিচুতলার কর্মীরা বোকা, তাই এদের কথায় বিশ্বাস করে। এর আগে কংগ্রেস সিপিএম-এর প্রক্সিওয়ার দেখতে দেখতে দশকের পর দশক কেটে গিয়েছে আমাদের। আজ এদের আসল চেহারা বেরিয়ে পড়েছে। আর পাটনার বৈঠক থেকে এই মমতার সাথে সিপিএম, কংগ্রেসের সম্পর্ক একেবারে প্রকাশ্যে চলে এসেছে। সুতরাং কংগ্রেস নেতা কৌস্তব বাগচীর মাথার চুল গজাক সেটা কি কংগ্রেস দল চাইছে?
যাই হোক, একটা কথা বলতে পারি, তৃণমূল পুলিশের দলদাসত্ব ও সর্বোপরি নির্বাচন কমিশনারের নির্লজ্জতা যখন সব সীমা অতিক্রম করেছে, তখন মানুষের কাছে গিয়ে ব্যাপক জনমত তৈরি করাই একমাত্র প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। তাতে হিংসার মাধ্যমে ভোটে লড়া তৃণমূলের সাথে সম্মুখ সমরে যাওয়াই সব নয়। আর পঞ্চায়েতে জয়লাভ করলেও এই সরকার তাদের কাজ করতে দেবে না। পূর্বের অভিজ্ঞতা তাই বলে। সেক্ষেত্রে এই লোকেরা বাধ্য হয়ে দল পরিবর্তন করে। আরও একটি বিষয় অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে, আদর্শগত কর্মী তৈরি না করে তৃণমূলের বাজে লোকেদের বাজে কথাকে কাউন্টার করার জন্য এর আগে ভুয়ো ডিগ্রীধারী বাজে কথা বলতেন। এখন অধ্যাপক নেতাও বাজে কথা বলে মিডিয়ায় হিরো হতে চাইছেন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর কাজ তাঁরাই করবে, কখনওই পাটি কর্মীরা সে ভূমিকা পালন করতে পারে না। তাই আবারও বলব, হিংসার মোকাবিলা হিংসার মাধ্যমে হয় না। গণতন্ত্রের অপেক্ষা করতে হয়, সময় হলে মানুষই তার জবাব দিয়ে দেবে।
previous post
