সুভাষ পাল, বিথারী: পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিথারী-হাকিমপুর গ্রামপঞ্চায়েতে শাসকদল তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে বিজেপি। বিধানসভা ও লোকসভা ভোটের ফলাফলের নিরিখে প্রায় এক তৃতীয়াংশ আসন দখলের জন্য তারা তাল ঠুকছে। এবার এই গ্রাম পঞ্চায়েতে ৮টি বুথে প্রার্থী দিয়েছে গেরুয়া শিবির। এছাড়া পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদেও প্রতিটি আসনে একজন করে প্রার্থী রয়েছে।
উল্লেখ্য, যে সব আসনে বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে, সেই আসনগুলিতে গত বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনে ভালো ফল করেছিল গেরুয়া বাহিনী। এমনকি এই ৮টি বুথে তারা এগিয়ে ছিল। এই অঞ্চলের বিজেপি নেতা সমরেশ পাল বলেন, একদিকে শাসকদলের লাগামছাড়া দুর্নীতি, অন্যদিকে গোষ্ঠীকোন্দলের ফলে অধিকাংশ বুথে তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ প্রার্থীরা কংগ্রেসের প্রতীকে ভোটে লড়ছেন। তাছাড়া নিয়োগ দুর্নীতি সহ বিভিন্নরকম দুর্নীতির কারণে মানুষ মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে। ফলে এবার তাঁদের ভোটের মার্জিন কমে যাবে।
পাশাপাশি, বাম ও কংগ্রেসের জোটেও রয়েছে একাধিক অসংলগ্নতা। অনেক জায়গায় তাঁদের গোঁজ প্রার্থীরা নির্দল হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছেন। যার ফলে বিজেপির অনেক সুবিধা হবে বলে মনে করেন সমরেশ পাল। এই অঞ্চলের বিজেপি-র প্রথম আমলের নেতা নিমাই সরকারও এবার ১৪ নম্বর জেলা পরিষদের প্রার্থী হয়েছেন। তিনিও এবার এই আসনে জয়লাভ করবেন বলে মনে করেন। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার পঞ্চায়েত সমিতিতেও বিথারী-হাকিমপুর অঞ্চলের পশ্চিম দিকের আসনে জয়লাভের ব্যাপারে তাঁরা যথেষ্ট আশাবাদী।
তবে তৃণমূলের উত্তর ব্লকের সভাপতি জিয়াউর রহমান মোল্লা বিজেপির এই দাবি নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি খুব খারাপ হলে আমরা এবার বিথারী-হাকিমপুর গ্রামপঞ্চায়েতে ২৬টি আসন পাব। কয়েক জায়গায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে বিক্ষুব্ধরা জোটের প্রার্থী হলেও তাঁরা অধিকাংশ আসনে পরাজিত হবেন। এমনকি আমরা ৩০-এ ৩০টি আসনও পেয়ে যেতে পারি। পঞ্চায়েত সমিতিতেও আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাব। উত্তর ব্লকের ১৪ নম্বর জেলা পরিষদের আসনেও কমপক্ষে দশ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করব। এখানকার পঞ্চায়েত সমিতির ৯টি আসনের ৯টিতেই জয়লাভ করব। তাছাড়া আমরা নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট করব। কাউকে কোনও হুমকি দেব না। প্রচারেও বাধা দেব না।’
অন্যদিকে বাম শিবিরও কংগ্রেসের কাঁধে ভর দিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাঁরা এই গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৭টি বুথে জোটের প্রার্থী দিয়েছে। যার মধ্যে ২২টি আসনে রয়েছে বাম প্রার্থী। কয়েক জায়গায় দুই দলের গোঁজ প্রার্থী থাকলেও বাম ও কং জোট মোটামুটি লড়াইয়ের ময়দানে রয়েছে। শাসক দলের একের পর এক দুর্নীতি, অনুন্নয়ন, গোষ্ঠীকোন্দলকে হাতিয়ার করে বামপন্থীরা নতুন করে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে। তবে জনসমর্থন ঠিক কোনদিকে যাবে, এবার কে দখল করবে বিথারী হাকিমপুর গ্রামপঞ্চায়েতের কুর্শি, তা জানতে গেলে অবশ্যই গণনার দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে।
previous post
next post