27 C
Kolkata
August 1, 2025
উত্তর সম্পাদকীয়

বামপন্থীদের কারণে আমাদের রাজ্যে দলহীন পঞ্চায়েত নির্বাচন সম্ভব হয়নি

শঙ্কর মণ্ডল: পঞ্চায়েত নির্বাচন মানে দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্ধারণের নির্বাচন নয়। পঞ্চায়েত নির্বাচন মানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নির্ধারণের নির্বাচন নয়।পঞ্চায়েত নির্বাচন মানে গ্রামের সরকার তৈরির নির্বাচন। এই নির্বাচনের মাধ্যমে স্থির করতে হবে আগামী ৫ বছর আপনার গ্রামের সরকারি ক্ষমতা কার মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে দেবার দায়িত্ব দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে বিগত ৫ বছর আপনার গ্রামের যে প্রতিনিধি ছিলেন, তাঁর কাজের হিসাব চাওয়ার নির্বাচন হল এই পঞ্চায়েত নির্বাচন। এই নির্বাচনে দলীয় আধিপত্য বিস্তার কখনোই মানুষের কল্যাণ করতে পারবে না।

গান্ধীজি এই পঞ্চায়েত ব্যবস্থার কথা বলেছিলেন। তবে সেটা অবশ্যই দলহীন নির্বাচনের মাধ্যমে পঞ্চায়েত তৈরি করার কথাই বলেছিলেন। পরবর্তীকালে বিভিন্ন পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে ১৯৭৭ সালে জয়প্রকাশ নারায়ণের নেতৃত্বে যে প্রথম অকংগ্রেসী সরকার তৈরি হয়েছিল, যার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মোরারজী দেশাই। সেই সরকার ১৯৭৮ সালে প্রথম এই পঞ্চায়েত ব্যবস্থা ও নির্বাচন চালু করেন। কিন্তু বামপন্থীদের কারণে আমাদের রাজ্যে দলহীন নির্বাচন সম্ভব হয়নি। কারণ, পঞ্চায়েতের মাধ্যমেই গ্রামে দলীয় আধিপত্য কায়েম করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। আর বর্তমান সরকার সেই বামপন্থীদের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে।

কিন্তু প্রশ্ন হল, মানুষ কী দেখছে? অভিষেকের হাস্যকর নবজোয়ার কর্মসূচীতে, যেভাবে ব্যালট লুঠের ঘটনা ঘটল, তা থেকেই তৃণমূলের দলীয় রাজনীতিতে কারা অবস্থান করছে, তা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আসলে রাজ্যের সমস্ত দুষ্কৃতীকারীরাই এখন তৃণমূলে। তারা যে কোনও মূল্যে তৃণমূলের টিকিট পেলেই আগামী ৫ বছর মানুষকে লুঠ করার ছাড়পত্র পাবে। তাই এই টিকিটের জন্য শেষ পর্যন্ত রক্তগঙ্গা বইবে।

যাই হোক, আজকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল, কালিয়াগঞ্জ ক্রমশ ভয়ঙ্কর চেহারা নিচ্ছে। মানুষের ক্ষোভ গিয়ে আছড়ে পড়ছে পুলিশের ওপর। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কারণ, গণতন্ত্রের সুষ্ঠ পরিচালনার জন্য পুলিশের ভুমিকা অনস্বীকার্য। মমতা ব্যানার্জী পুলিশকে দিনের পর দিন বেআইনি কাজে ব্যবহার করার ফলে পুলিশের ন্যায়পরায়ণতা ও দক্ষতা নষ্ট হয়ে গিয়েছে।

পুলিশ যে মানুষের বন্ধু, শত্রু নয়, সেটাই মানুষ ভুলে গেছে। এর জন্য কি শুধুই মানুষ দায়ী? কালিয়াগঞ্জে জাভেদকে কঠিন শাস্তি থেকে বাঁচাতে পুলিশ যেভাবে প্রভাব খাটিয়ে হত্যাকে আত্মহত্যা বলে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে, তাতেই মানুষ এই মুহূর্তে ক্ষুব্ধ। আসলে অপরাধীর গোষ্ঠী দেখেই বর্তমানে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। যা বিভিন্ন ঘটনার মাধ্যমেই অভিযোগকে শক্তিশালী করে।

বর্তমানে একদিকে চলেছে ল্যান্ড জেহাদ, আর অন্যদিকে চলেছে লাভ জেহাদ। তারপর চলেছে একের পর এক পরিকল্পনার মাধ্যমে এই দেশটাকে পাল্টে ফেলার চক্রান্ত। কিন্তু জেহাদীদের নিজেদের দেশ হলেও হিংসার কিন্তু সমাপ্তি ঘটে না। তা পাকিস্তান, বাংলাদেশ থেকে শুরু করে মিশর, নাইজেরিয়া সর্বত্রই প্রমাণিত। তাই যারা এই যুদ্ধের দেশ বলে এই দেশকে মনে করে না, ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে, তারা জেহাদীদের সমর্থক নয়।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ লেখক সংযুক্ত হিন্দু ফ্রন্টের সভাপতি। এই প্রবন্ধে সমস্ত মতামত তাঁর ব্যক্তিগত।

Related posts

Leave a Comment