সংবাদ কলকাতা, ২৪ অক্টোবর: সোমবার কালীপুজোর দিন ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল শহরে। বানতলায় লেদার কমপ্লেক্সের দোতলায় এই আগুন লাগে। পরে তিন ও চারতলায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, চারতলা এই বাড়ির দোতলায় সোমবার বিকালে কর্মীরা বাজি ফাটানোর সময় একটি ঘরে মজুত রাসায়নিকে আগুন লাগে। পরে সেই আগুন সারা বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে দমকলের ১৬টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
এদিকে দোতলায় আগুন লেগে যাওয়ার পর অধিকাংশ কর্মীরা কমপ্লেক্সের মধ্যে আটকে পড়ে। কারণ, আগুন মুহূর্তের মধ্যে গোটা বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। এই বাড়ির তিন ও চারতলায় রয়েছে চামড়ার কারখানা। এদিকে দোতলায় আগুন লেগে যাওয়ায় ১১জন কর্মী নিচে নামতে না পেরে ছাদে উঠে যান। পরে পুলিশ ও দমকল এসে আটকে পড়া ওই কর্মীদের নীচে নামিয়ে আনে।
জানা গিয়েছে, এদিন বিকেলে বাজি ফাটানোর সময় আগুনের ফুলকি চামড়ার কাজে ব্যবহার্য রাসায়নিকের উপর পড়তেই মূহুর্তের মধ্যে বিধ্বংসী আগুন সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। কালীপুজো ও ছটপুজো উপলক্ষে ভিনরাজ্যের কর্মীরা বাড়ি চলে গেলেও স্থানীয় বেশকিছু কর্মী কারখানাতেই ছিলেন। এদিন দুপুর বেলায় কোনও বিধিনিষেধ না মেনে ওই বিল্ডিং-এর দোতলায় বাজি ফাটাতে গিয়েই এই বিপদ ডেকে নিয়ে আসেন তাঁরা। বিল্ডিংয়ের বিভিন্ন ঘরে চামড়া প্রক্রিয়াকরণের রাসায়নিক মজুত ছিল। যা খুবই দাহ্য। যার ফলে বাজির সামান্য ফুলকি পড়তেই আগুনের লেলিহান শিখা ভয়াবহ বিস্ফোরণের আকার নেয়।
খবর পেয়ে প্রথমে দমকলের ৭টি ইঞ্জিন এলেও পরে আরও ৯টি ইঞ্জিন ও ল্যাডার নিয়ে আসা হয়। দমকল বাহিনীর পাশাপাশি খবর পেয়ে ছুটে আসে লেদার কমপ্লেক্স থানা ও প্রগতি ময়দান থানার পুলিশ কর্মীরা। বিল্ডিংয়ে আগুন লাগার পর অক্সিজেনের সংকট তৈরি হয়। দমবন্ধ হয়ে আসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন রাজু শেখ নামে এক শ্রমিক। ১৮ বছর বয়সী রাজুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
বিষয়টি খতিয়ে দেখতে দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি বলেন প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয়েছে। বানতলা লেদার কমপ্লেক্স শ্রমিক ইউনিয়ন সূত্রে খবর, ৮ নম্বর জোনের এই কারখানাটি একটি চীনা সংস্থার। কারখানাটি অধিকাংশই আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। যার পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা।