সুভাষ পাল ও সুমন মল্লিক, ১৭ নভেম্বর: সিএএ পাশ হওয়ার আগে ও পরে রাজ্যজুড়ে প্রবল বিরোধিতা করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তাঁদের দাবি ছিল, রাজ্যে ভোটার তালিকায় কারও নাম উঠতে বাকি নেই। তাহলে নতুন করে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাশ করার কী প্রয়োজন? বিষয়টা বিজেপির চক্রান্ত বলে রাজ্য তথা দেশ জুড়ে শুরু হয় প্রবল আন্দোলন।
তখন ভাবটা এমন ছিল, তাঁরা আসলে রাজনৈতিক মতের উর্দ্ধে উঠে ওপার বাংলা থেকে আসা নির্যাতিত হিন্দুদের নাগরিকত্বের পক্ষে। বিজেপি এই বিল (সিএবি) সংসদে পেশ করার পর তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি তিনি রাজনৈতিক সভাগুলিতে সিএএ-এর বিরুদ্ধে একটি স্লোগানও তুলেছিলেন। এবার ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে এল তৃণমূলেরই এক নেতার মুখ থেকে। তৃণমূলকে সমর্থন না করলে ওপার বাংলা থেকে আসা হিন্দুদের ভোটার করার পক্ষে নন তাঁরা। বৃহস্পতিবার একটি প্রকাশ্য সভায় ঘটেছে এমনই ঘটনা।
নাম খোকন দাস। বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভার বিধায়ক। আজ তিনি প্রকাশ্য সভায় নির্দেশ দিয়েছেন, ওপার বাংলা থেকে আসা হিন্দুদের নাম যেন ভোটার তালিকায় না ওঠে। বৃহস্পতিবার বুথ লেভেল এজেন্টদের নিয়ে একটি সভা করে তিনি জানিয়ে দেন, বাঙাল হিন্দুদের নাম ভোটার তালিকায় তোলা যাবে না। যে সমস্ত পরিবার তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের নাম ভোটার তালিকায় তোলা হবে এবং সংশোধন বা স্থানান্তর করা হবে।
অপরদিকে, ১৯৭২ সালের পর যাঁরা ওপার বাংলা থেকে এসেছেন, তাঁদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকি যাঁরা নতুন এসেছেন, তাঁদের নাম যেন ভোটার তালিকায় সংযোজন না হয়। তার নিদান দিয়েছেন খোকন। কারণ তাঁর মতে, এরাই নাকি বিজেপির ভোট ব্যাঙ্ক।
রাজনৈতিক মহলের ধারণা, পরোক্ষভাবেভাবে তিনি মতুয়াদের নিশানা করেছেন। কারণ, মতুয়ারা এদেশে এসে ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড বা পাট্টা পেলেও নাগরিকত্ব তাঁরা এখনও পান নি। বিজেপি তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এজন্য সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধন আইন(সিএএ) পাশ করিয়েছে। তাই উদবাস্তু বাঙালরা বিজেপির ভোট ব্যাঙ্কে পরিণত হয়েছে।
previous post