33 C
Kolkata
August 2, 2025
বাংলাদেশ বিদেশ

বঙ্গভবন থেকে সরানো হল শেখ মুজিবর রহমানের ছবি

Sheikh Mujibur Rahman’s Picture Removed From Bangabhaban

হাসিনার পদত্যাগের পর অন্ধকার যুগের আরও একটি করুণ অধ্যায় দেখল বাংলাদেশ তথা গোটা বিশ্ব। বঙ্গভবন থেকে সরানো হল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছবি। এভাবে পাকিস্তানের অত্যাচারী শাসকদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করে যে ব্যক্তি দেশের মানুষের জন্য স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন, গড়ে তুলেছিলেন একটি সার্বভৌম ও স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র, সেই ইতিহাসকে মুছে দেওয়ার চেষ্টা করা হল। তবে প্রশ্ন উঠছে, এভাবে কি বাংলাদেশের মানুষের মন থেকে মুজিবর রহমানকে মুছে ফেলা যাবে?

সেই সঙ্গে সেদেশের অন্তর্বর্তী সরকার আরও একটি চাঞ্চল্যকর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্কুলের সিলেবাসে যুক্ত হচ্ছে আরবি ভাষা। আগে এই ভাষা পাঠ্যসূচিতে থাকলেও তা বাধ্যতামূলক ছিল না। এবার সেটা বাধ্যতামূলক হতে চলেছে। অর্থাৎ সেদেশের বাংলাভাষী নাগরিকরা হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে এবার থেকে আরবি ভাষায় পড়াশোনা করতে বাধ্য হবে।

বিতর্কের সূত্রপাত গত রবিবার। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নতুন তিন উপদেষ্টার শপথ অনুষ্ঠানের সময় বঙ্গভবনের দরবার হলে বঙ্গবন্ধুর ছবি ঘিরে। এর প্রতিবাদে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। তারপরেই আজ ফেসবুক পোস্ট করে দরবার হল থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি সরানোর কথা জানান মাহফুজ।

বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে শুধু ছবি সরিয়েই ক্ষান্ত হননি নতুন সরকারের প্রতিনিধিদের। এবার উচ্চ মাধ্যমিকের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যবই থেকে চারজন লেখকের লেখা বাদ দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছেন শেখ মুজিবর রহমান ও মহম্মদ জাফর ইকবাল। এছাড়াও, তিনজনের কবিতা ও গল্প পরিবর্তন করা হয়েছে। পাঁচজন লেখকের রচনার অনুশীলনী পরিবর্তন করারও প্রস্তাব রাখা হয়েছে। সেইসঙ্গে ২০২৫ সালের শিক্ষাবর্ষে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সিলেবাসে নতুন বিষয় হিসেবে যুক্ত করা হচ্ছে আরবি ভাষা।

উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদ্য নিযুক্ত উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সোমবার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছেন। সেই পোস্টে তিনি এই তথ্য প্রকাশ্যে আনেন। ফেসবুকের পোস্টে তিনি লেখেন, ‘বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে ৭১ পরবর্তী ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরানো হয়েছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার যে, আমরা ৫ আগস্টের পর বঙ্গভবন থেকে তার ছবি সরাতে পারিনি। ক্ষমাপ্রার্থী। কিন্তু, জুলাইয়ের চেতনা বেঁচে থাকা পর্যন্ত তাকে আর কোথাও দেখা যাবে না।’

তিনি পোস্টে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার সমালোচনা করেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের এই নেতা তাঁর পোস্টে আরও লেখেন, ‘শেখ মুজিব এবং তাঁর মেয়ে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে যা করেছেন, তা বাংলাদেশ আওয়ামি লিগকে স্বীকার করতে হবে। ১৯৭২ সালের অগণতান্ত্রিক সংবিধানের পাশাপাশি দুর্ভিক্ষ, কোটি কোটি টাকা পাচার এবং হাজার হাজার ভিন্নমতাবলম্বী ও বিরোধীদের বিচারবহির্ভূত হত্যার (৭২-৭৫, ২০০৯-২০২৪) জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। তবেই আমরা ১৯৭১ সালের আগের শেখ মুজিবের কথা বলতে পারি। ক্ষমা ও ফ্যাসিস্টদের বিচার ছাড়া কোনও সমন্বয় হবে না।’

প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা হয়। বিভিন্ন বিভাগীয় দপ্তর থেকে সরিয়ে ফেলা হয় শেখ মুজিবর রহমান ও শেখ হাসিনার ছবি।

এদিকে নতুন তিনটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে শেখ হাসিনা সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী ডা. দীপু মনি, রাশেদ খান মেনন, শাজাহান খান, প্রাক্তন এমপি আহমেদ হোসেন, আব্দুস সোবহান গোলাপ-সহ আটজনকে। সোমবার সকালে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। পরে শুনানি শেষে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত।

Related posts

Leave a Comment