সংবাদ কলকাতা: ফের নওশাদ সিদ্দিকিকে আটকালো বিধাননগরের পুলিশ। রবিবার ভাঙড়ে যাওয়ার পথে নিউটাউনের হাতিশালার মোড়ের কাছে বাধা দেওয়া হল আইএসএফ বিধায়ককে। গত শুক্রবারও একইভাবে হাতিশালার মোড়ের কাছে আটকানো হয় তাঁকে। ১৪৪ ধারার অজুহাতে তাঁর বিধানসভা এলাকায় বারবার যেতে বাধা দিচ্ছে পুলিশ। এমনই অভিযোগ বিধায়ক সিদ্দিকীর। এদিন তিনি বলেন, শুধুমাত্র নওশাদ সিদ্দিকীকে আটকানোর জন্যই ভাঙড়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
তিনি হাতিশালার মোড়ের সামনেই পুলিশের ডিএসপিকে সরাসরি প্রশ্নবাণ ছুঁড়ে দেন, “স্যার আপনার কাছে জানতে চাইছি, ১৪৪ ধারা মানে কি? আপনি আমার প্রশ্নের উত্তরটা দিন। তৃণমূলের নেতারা যেখানে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, সেখানে আমাকে কেন বাধা দেওয়া হচ্ছে? আমি একজন ল মেকার হয়ে কেন আমার বিধানসভা এলাকায় জনসেবার কাজে যেতে পারবনা? ১৪৪ ধারার নিয়ম অনুযায়ী আমার সঙ্গে তো ৫ জন লোকও নেই। তাহলে কোন নিয়মে আমাকে আটকানো হচ্ছে! প্রয়োজনে আমার নিরাপত্তারক্ষী ও ড্রাইভারকে এখানে রেখে যেতে রাজি আছি। আমাকে যেতে দিন।” কিন্তু এতসব প্রশ্নের পরেও পুলিশ কার্যত নীরব প্রহরীর ভূমিকা পালন করে। সাংবাদিকরাও পুলিশের এই ভূমিকায় হতবাক হয়ে যান।
গতদিন গাড়িতে বসে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ালেও আজ তিনি গাড়িতে বসে থাকেননি। গাড়ি থেকে নেমে এসে ব্যারিকেডের কাছে চলে আসেন। এভাবে তিনি একাই নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে ঢুকতে যান। কেন তাঁকে আটকানো হচ্ছে, তার কারণ জানতে চান তিনি। তিনি বলেন, যেখানে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে, সেটি ১৪৪ ধারার অধীনে পড়ে না। বেশ কিছুক্ষণ পুলিশের সঙ্গে বচসার পর শেষে পায়ে হেঁটে ওপারে যাওয়ার চেষ্টা করেন বিধায়ক। তিনি ব্যারিকেড টপকে যাওয়ার চেষ্টা করলেও পুলিস তাঁর পথ আটকানোয় সন্ধ্যার পর সেখান থেকে বেরিয়ে যান তিনি।
তিনি অভিযোগ করেন, শওকত মোল্লা ও অন্যান্যদের সভা ও মিছিল করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে, তাহলে তাঁকে কেন আটকানো হচ্ছে? শেষমেশ কোনও সুরাহা না হওয়ায় ভাঙড়ে ঢোকার অনুমতি পেতে আদালতে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন নৌশাদ। এ নিয়ে আজ, সোমবারই আদালতের দ্বারস্থ হবেন।
এদিকে, এই ঘটনার পর ক্ষুব্ধ হন আইএসএফ কর্মী সমর্থকরা। তাঁরা ভাঙড়ের রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ শুরু করেন।খবর পেয়ে ছুটে আসে বনদপ্তর। বনদপ্তরের কর্মীরা সেইসব গাছের গুঁড়ি বাজেয়াপ্ত করে। জানা গিয়েছে, রবিবার বনদপ্তরের একটি দল কাশীপুর থানার পুলিসকে সঙ্গে নিয়ে শোনপুর বাজারে যায়। সেখানে বেশ কিছু গাছের গুঁড়ি বাজেয়াপ্ত করে।
উল্লেখ্য, গত ১১ জুলাই ভোট গণনার দিন একইভাবে এখানে গাছের গুঁড়ি ফেলে রাস্তা অবরোধ করেন আইএসএফ কর্মী-সমর্থকরা। যার ফলে মাঝরাস্তায় পুলিসের গাড়ি আটকে পড়ে। সেই ঘটনার জেরে এবার পদক্ষেপ করল বনদপ্তর। এবার তারা শোনপুর বাজারে এসে কয়েক লক্ষ টাকার গাছের গুঁড়ি তুলে নিয়ে গেল। যারা গাছ কাটছে, তাদের কাঠের ব্যবসার বৈধ লাইসেন্স আছে কি না, তার তদন্ত শুরু করেছে বনদপ্তর।