ফরাক্কা : প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নিয়ে রাজ্য সরকারের অস্বস্তি যেন কিছুতেই পিছু ছাড়তে চাইছে না। কোথাও প্রধানকে আটকে রেখে বিক্ষোভ, আবার কোথাও পঞ্চায়েতের সামনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে সাধারণ মানুষ। এবার ফারাক্কার এক পঞ্চায়েত প্রধানকে রীতিমতো জামার কলার ধরে হিড়হিড় করে টানতে টানতে নিয়ে এলো গ্রামসভায়। গতকাল বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে ফারাক্কা ব্লকের বেওয়া ২ গ্রামপঞ্চায়েতে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। এরপর ছোটন মেহের নামে ওই পঞ্চায়েত প্রধানকে উদ্ধার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, আবাস যোজনার টাকা সঠিকভাবে গরীব গ্রামবাসীদের মধ্যে বন্টিত হচ্ছে না। বঞ্চিত হচ্ছে দরিদ্র মানুষ। যা নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। গ্রামে শালিসি সভা ডেকে পঞ্চায়েত প্রধানের বিচার শুরু হয়। প্রধান প্রথমে সভায় হাজিরা দিতে না চাইলে গ্রামবাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। উত্তেজিত গ্রামবাসী প্রধানকে পেলে তাঁকে জামার কলার ধরে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে আসে গ্রাম সভায়।
এদিকে ফরাক্কার অর্জুনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ঘটেছে আরও একটি ঘটনা চাঞ্চল্যকর ঘটনা। প্রধানের শাশুড়ি চন্দ্রভান বিবির নামে রয়েছে পেল্লায় দোতলা বাড়ি। সেই বাড়িতেই থাকেন মহিলা পঞ্চায়েত প্রধান ওহায়িদা খাতুন। অথচ সেই শাশুড়িরই আবাস যোজনার তালিকায় ফের নাম উঠেছে। মতলবটা বুঝতে বেশি দেরি হয়নি গ্রামের বাসিন্দাদের। এই ঘটনায় পঞ্চায়েত প্রধান ওহায়িদার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে । প্রশ্ন উঠছে, এত বড় ইমারতের মালিকানা থাকা। অথচ কেন চন্দ্রভানের নাম রয়েছে আবাস যোজনার তালিকায়? স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রধানের শাশুড়ির নাম সেই তালিকায় জ্বলজ্বল করছে। অথচ তালিকায় যাদের ঘর পাওয়ার কথা তাঁদের নাম নেই ।
অন্যদিকে এই ঘটনায় অস্বস্তিতে অর্জুনপুরের প্রধান ওহায়িদা খাতুন। তিনি দাবি করেন, এই নাম দেখার পরেই আবাস যোজনার দায়িত্বে থাকা তত্ত্বাবধায়ককে তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
প্রধান বলেন, “যখন সমীক্ষা চলছিল তখন কোনও ভাবে আমার শাশুড়ির নাম ওই তালিকায় চলে আসে। আমি বুঝতে পারিনি। তালিকা আসার পর দেখলাম শাশুড়ির নাম রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই তত্ত্বাবধায়ককে নাম সরিয়ে দেওয়ার কথা বলি। সেই নাম সরিয়ে দেওয়া হবে। মানুষ মাত্রই ভুল হয়। কী করে নাম চলে এল সত্যিই বুঝতে পারছি না।’’ বিরোধীদের তরফে আনা দুর্নীতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘সামনে পঞ্চায়েত ভোট তাই আমার নাম খারাপ করার চেষ্টা চলছে। তবে মানুষ আমাকেই ভালবাসে।’’
কিন্তু, এই ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় সিপিআইএম নেতা দিলীপ মিশ্র। তিনি অভিযোগ করেন, শুধু অর্জুনপুরের প্রধানের শাশুড়ি নয়, এই অঞ্চলের উপপ্রধানের নামও আবাস প্লাস যোজনার তালিকায় রয়েছে। অথচ তাঁদের প্রত্যেকেরই রয়েছে পাকা বাড়ি। এভাবে পঞ্চায়েতের টাকা এরা দুহাতে লুটেপুটে খাচ্ছে।
previous post