শঙ্কর মণ্ডল: অনেকদিন বাদে নন্দনে একটি সিনেমা দেখলাম, একপ্রকার আবদার মেটাতে। “কাবেরীর অন্তর্ধান রহস্য”, ১৯৭৫ -এর জরুরী অবস্থার পর অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে সারা দেশজুড়ে একদিকে যখন স্বৈরাচারী ইন্দিরা গান্ধীর বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ সংগঠিত হচ্ছে, ঠিক অন্যদিকে এই রাজ্যে একটা ভয়ঙ্কর আইডিওলজি নিয়ে একদল মেধাবী ছাত্র মানুষ খুন করছে ও নিজেরা মরছে। হ্যাঁ, আমি চিরকালই এই কমিউনিষ্টদেরকে এই দেশের রাজনীতিতে আলটাভাইরাস বলেই মনে করি। আর এই ভাইরাসরা এখন এই রাজ্যে তাদের রূপ পাল্টেছে। আর এরা এখন এমনভাবে নিজেদের পক্ষে সওয়াল করছে, তাতে মনে হচ্ছে ওরা ৩৪ বছর এই রাজ্যকে স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিল।
কিন্তু তারাই এই রাজ্যের মানুষের একদিকে নিজস্ব আদর্শকে ভুলিয়ে দিয়ে বিকৃত মতবাদ ও ইতিহাসকে পরিবেশন করে মানুষকে নেশাগ্রস্ত করে রেখেছে। আর অন্যদিকে দিনের পর দিন হিন্দুত্ববাদী শক্তির অপরিণত, অপরিপক্কতা ও সর্বোপরি কামিনী কাঞ্চনে আসক্তির কারণেই এই ভাইরাসরা আবারও মাথাচাড়া দিতে সক্ষম হচ্ছে। কারণ, এই মুহূর্তে রাজ্য সরকার এমনভাবে দুর্নীতির চোরা বালিতে তলিয়ে যাচ্ছে, তাতে সরকার তথা তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্রমশ জনমত শক্তিশালী হচ্ছে। আর এই জনমতকে নিজেদের দিকে অক্ষত রাখতে বর্তমান তৃণমূল সরকার রাষ্ট্রশক্তিকে ব্যবহার করে কেবল পুলিশ ও ওদের নিয়ন্ত্রিত গুন্ডাদের দিয়ে চেষ্টা করে চলেছে। কিন্তু ওরা মূর্খ। তাই জানে না যে, এইভাবে পৃথিবীর কোনও রাজতন্ত্র টেকেনি। গণতান্ত্রিক সরকার তো নয়ই।
দৈনন্দিন ঘটনা এমনভাবে সামনে চলে আসছে, যাতে এই মুহূর্তে টাকা, টাকা আর টাকা লুঠ একটা স্বাভাবিক ঘটনা বলেই মনে হচ্ছে। মানিক, রতন, অনু, পরমাণুরা এখন শুধু একা নয়, তাদের স্ত্রী, পুত্ররাও এই টাকা লুঠের সঙ্গে যুক্ত। সেটাও প্রমাণিত হচ্ছে। তবে এসবের মধ্যে এখন সবচেয়ে আকর্ষণীয় হল কালীঘাটের কাকু সুজয় ভদ্রের বিরুদ্ধে তদন্ত নিয়ে। আর তার বস, মানে বাংলার যুবরাজকে নাকি কেউ কিছুই করতে পারবে না, এমনটাই মনে করে কালীঘাটের কাকু সুজয়বাবু।
যাই হোক, পাহাড়ে নতুন করে কি অস্থিরতা তৈরি হবে? বন্ধ হবে কি হবে না, রাজ্য সরকারী কর্মচারীরা আগামী দিনে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে? আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে কে জিতবে? তা নিয়ে খুব বেশি আগ্রহ নেই। প্রকৃতির নিয়মেই সরকারের পতন ঘটবে।
previous post
next post