পেশোয়ার: পাকিস্তানের পেশোয়ারে একটি মসজিদে ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু হল ৯০ জনের। ঘটনায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ৫০ জন জখম প্রার্থনাকারী। তাঁদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা খুবই সঙ্কটজনক। তাঁরা এখন স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রশাসনের আশঙ্কা, হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বিস্ফোরণের প্রবল তান্ডবে আংশিকভাবে ধসে পড়েছে মসজিদটি। এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গোটা পাকিস্তানজুড়ে। পেশোয়ারের পুলিস কমিশনার রিয়াজ খান জানান, ‘সে সময় মসজিদে প্রার্থনার জন্য প্রচুর মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। ঘটনার পর এখনও পর্যন্ত ৯০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।’
সোমবার দুপুর ১ টা ৪০ মিনিট নাগাদ যোহরের নামাজের সময় ঘটেছে এই ঘটনা। ঘটনাস্থলে প্রায় ৩০০ জন মানুষ নামাজে মনোযোগী ছিলেন। এক আত্মঘাতী জঙ্গি তখনই এই বিস্ফোরণ ঘটায়। বিস্ফোরণে মারাত্মকভাবে ক্ষত বিক্ষত হন বহু মানুষ। অনেকে ঝলসে যান আগুনে। ধোঁয়ায় ভরে যায় পুরো মসজিদ চত্বর। মসজিদের মেঝে রক্তে ভেসে যায়। বাঁচার জন্য মানুষ আর্তনাদ করতে থাকে। মসজিদের ধ্বংসস্তূপের তলায় অনেকে চাপা পড়ে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সেদেশের একটি সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান অর্থাৎ টিটিপি এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের দাবি, হামলার সময় মসজিদের ভিড়ে মিশে ছিল ওই আত্মঘাতী জঙ্গি। নামাজের সময় সামনের সারিতেই ছিল সে।
এদিকে দেশের সাধারণ মানুষের অভিযোগ, সরকার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় খেসারত দিতে হচ্ছে দেশবাসীকে। হামলার তীব্র নিন্দা করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তিনি বলেন, বিস্ফোরণে জড়িতদের কঠোর সাজা দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে আহতদের দ্রুত চিকিৎসারও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিস্ফোরণে নিহতদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি ট্যুইট করেছেন, ‘সন্ত্রাসবাদীদের মোকাবিলা করার জন্য দেশের গোয়েন্দা, নিরাপত্তা ও পুলিস বাহিনীকে শক্তিশালী করার প্রয়োজন।’
উল্লেখ্য, গত বছর মার্চ মাসে পেশোয়ারে অন্য একটি মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। আত্মঘাতী সেই বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় ৬৪ জনের। সেই হামলার দায় নিয়েছিল আইএস।
previous post