শঙ্কর মণ্ডল
আবাস যোজনাই হোক আর অন্য যেকোনও সরকারি প্রকল্পই হোক, সবক্ষেত্রেই প্রাপক হওয়ার জন্য আবেদন করতে হয়, তাই স্বাভাবিকভাবেই সেই আবেদনপত্র তা অফলাইন হোক বা অনলাইনই হোক যাঁদের নাম উঠেছে, তাঁদের বিশেষ করে যাঁরা অনুপযুক্ত বলে মনে হচ্ছে, অবিলম্বে তাঁদের আবেদনপত্র খতিয়ে দেখা হোক। সেখানে তাঁদের সই আছে কিনা? সেই সঙ্গে যে বিডিও এই নাম নথিভুক্ত করার জন্য পাঠিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে এই মুহূর্তে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। কারণ, বর্তমানে বঞ্চিত মানুষদের পরিবর্তে যেভাবে স্বজনপোষণকারীরা নিজেদের লোকজনকে সুবিধা পাইয়ে দিতে গিয়ে ধরা পড়ে গেছে, তাকে চাপা দিতে এখন নিশীথ প্রামাণিকের বাবার নাম বা অন্য কোনও বিজেপি নেতার আত্মীয়ের নাম ঢুকিয়ে দিয়ে হৈচৈ করছে।
বিষয়টির সঠিক তদন্ত হলেই প্রমাণ হয়ে যাবে। কলকাতায় বসে কখনো টিভি চ্যানেলে কখনো প্রকাশ্য সভায় তৃণমূলের তথাকথিত শিক্ষিত নেতারা যেরকম বিজেপি উস্কানি দিচ্ছে, বা এই ধরণের আবোল তাবোল বিবৃতি দিচ্ছে, তাতে এদের শিক্ষিত তো বলাই যাবে না, বরং এটাই প্রমাণ করে, জেলায় জেলায় যে তৃণমূল কংগ্রেস একটা লুম্পেনদের কারখানায় পরিণত হয়েছে, তার সঙ্গে এই নেতাদের কোনও পার্থক্য নেই। তা নাহলে এই নাম তোলার ক্ষেত্রে পুরোটাই যে রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারভুক্ত সেটা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই জেনেও এরা এইভাবে গলা ফাটাচ্ছে কেন?
এখন তো দেখা যাচ্ছে, তৃণমূলে তৃণমূলের বাড়ি পোড়াচ্ছে। বিক্ষোভ এখন সমস্ত সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে। অভিষেক কতগুলো পঞ্চায়েত প্রধান বা দায়িত্বপ্রাপ্তকে পদত্যাগ করাবে? আসলে এভাবে কি ড্যামেজ কন্ট্রোল করা যায়? দুষ্কৃতীদের নিয়ে দল চালিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করতে গিয়ে রাজ্যটাকে বোমা, বন্দুকের কারখানায় পরিণত করেছেন এই তৃণমূল সুপ্রিমো।
এখন প্রকাশ্যে অভিনেত্রী খুন হচ্ছে, তাও আবার বাগনানের মত জায়গায়, ন্যাশনাল হাইওয়ের ধারে। মুখে তদন্ত, তদন্ত করে ও বিচার ব্যবস্থার ওপর আস্থার কথা বলে হয়ত কিছুটা সময় চুরি করা যায়। আর সব কিছুর মধ্যেই শুভেন্দুর ভূত দেখে, শুভেন্দুকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না বলে ফোকাস ঘুরিয়ে দিতে চাইছে যাঁরা, তাঁদের কথার তীব্র আক্রমণ করা দরকার। কারণ যে নারদা নিয়ে শুভেন্দুকে আক্রমণ করা হচ্ছে, সেই নারদায় কাউকেই এখনও গ্রেফতার করে রাখা হয়নি। কারণ এই মামলা কখনওই শক্তিশালী নয়। আর তাতেও আমি এটা নিয়ে আলোচনা না করে এর বিরুদ্ধে তৃণমূলের আদালতে যাওয়া উচিত বলেই মনে করি।
এদের তো এখন করুণা করতেও ইচ্ছা হয় না। এরা গান গানের জায়গায়, সিনেমা সিনেমার জায়গায় রাখতেও রাজি নয়। না! অবশ্য সেই গান বা সিনেমা যদি কোনও বিশেষ ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের ভাবাবেগকে আঘাত করে, সেক্ষেত্রে আলাদা। কিন্তু কেবলমাত্র অভিনেতা পছন্দের নয় বলে নন্দনে তার সিনেমা চলতে দেব না, বা কেউ গান গাইল, রং দে গেরুয়া; তার জন্য তাঁর শোয়ের জন্য ইকোপার্কে পারমিশন দেওয়া যাবে না বলে যাঁরা, তাঁরা আর যাই হোক পলিটিক্যাল মেটিরিয়াল নয়।
তাই এখন জাতীয় শিক্ষানীতি তৈরির জন্য কমিটিতে এই রাজ্যের কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জায়গা হবে কি করে? কারণ, এখানে শিক্ষা ব্যবস্থাটাই তো কোমায় চলে গেছে। পুরো শিক্ষা দপ্তরটাই যেখানে জেলে চলে যায়, সেখানে জাতীয় নীতি তৈরিতে এদের কি যোগ্যতা আছে? প্রশ্নগুলো করে গেলাম, বিতর্ক চাইলে দীর্ঘ বিতর্কে প্রস্তুত। তবে সেই বিতর্ক করার জন্য যুক্তি নিয়ে উপস্থিত হতে হবে। এটা ভুলে গেলে চলবে না, এখানে শিক্ষা দপ্তর থেকে পুরস্কার পায়, এপাং ওপাং ঢপাং লেখা কবিতা।
যাই হোক, আমার এসবের মধ্যে খুব বেশি আগ্রহ নেই। আমি চিন্তিত জেহাদীদের শক্তিবৃদ্ধিতে ও নিয়োজিত আছি সনাতনীদের ঐক্যবদ্ধ করতে। ৭০৩ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া কুম্ভস্নানের যে আয়োজন হয়েছে, আগামী ১১ ই ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত, তার প্রস্তুতি পূজন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১লা জানুয়ারি। সেখানে সকল সনাতনীদের অংশগ্রহণের আবেদন জানিয়ে আজকের লেখা শেষ করছি।
[বিশেষ দ্রষ্টব্য: লেখক সংযুক্ত হিন্দু ফ্রন্টের সভাপতি। এই প্রবন্ধে সমস্ত মতামত তাঁর ব্যক্তিগত। এবিষয়ে আপনার কোনও মন্তব্য থাকলে লিখে পাঠান আমাদের ই-মেইল -এ। যুক্তিযুক্ত লেখা এই বিভাগে প্রকাশিত হবে।]