নিজস্ব সংবাদদাতা, জয়নগর: সামনেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গা পূজা। ঢাকে কাঠি পড়তে বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। এই পূজাকে কেন্দ্র করে এই কয়েক মাস ধরে চরম ব্যস্ততায় থাকেন প্রতিমার অলংকার শিল্পীরা। পুজোর বাকি হাতে গোনা আর কয়েকটা দিন। ফলে এই ক’দিন নাওয়া খাওয়ার ফুসরত নেই তাঁদের। মৃৎ শিল্পীদের থেকে বেশী ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন এই গহনা শিল্পীরা। তাঁদের হাতের ছোঁয়ায় তৈরি হয় রকমারি গহনার সেট ও ডাকের সাজ।
প্রতিমার সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে শোলার গহনা তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাপ ঠাকুরদার হাত ধরে শোলার গহনা ও ডাকের সাজে হাত পাকিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর থানা এলাকার দাস পাড়ার শিল্পীরা। বংশপরম্পরায় এই শিল্প হয়ে আসছে ওদের প্রধান জীবিকা। এই কয়েক মাস ধরে প্রতিমার অলংকার তৈরি করে সারা বছর সংসার চালান তাঁরা।
বাড়ির সবাই কাজে হাত লাগালে একটি প্রতিমার সাজ তৈরি করতে সময় লাগে এক সপ্তাহ। বিভিন্ন উচ্চতার প্রতিমার জন্য প্রতিটা সেটের সাজ তৈরি করতে খরচ হয় তিন থেকে দশ হাজার টাকা। বিভিন্ন সাজের মধ্যে এখানে তৈরি হয় প্রতিমার মুকুট, আঁচলা, চালি, বুক চেলি, ঘাড় বেণী, কল্কা ও কান মোগর প্রভৃতি। এইসব গহনার সেট তৈরি হওয়ার পরে কলকাতার বড়বাজার থেকে কুমোরটুলি, সমস্ত জায়গায় পাইকারি দরে সরবরাহ করেন।
সরকার বড় বড় শিল্পের সঙ্গে সঙ্গে যদি এই শিল্পের মতো ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উপর বিশেষভাবে নজর দেন, তাহলে আগামী দিনে নতুন প্রজন্ম এই শিল্পকে পেশা করে এগোতে পারবে। না হলে নতুন প্রজন্ম এই শিল্প থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেবে বলে মনে করছেন জয়নগরের প্রান্তিক এলাকার এই প্রাচীন শিল্পীরা।