নিজস্ব সংবাদদাতা, কাকদ্বীপ: মৎস্যজীবীদের সুবিধার্থে সরকারিভাবে তৈরি করা হয়েছিল মাছের কোল্ড স্টোরেজ। কিন্তু সম্পূর্ণভাবে স্টোরেজটি তৈরি হওয়ার পরেও কেটে গিয়েছে পাঁচ বছর। তালা বন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে কাকদ্বীপ মৎস্য বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ এই কোল্ড স্টোরেজটি। মৎস্য ইউনিয়ন সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরে প্রচুর পরিমাণের ইলিশ মাছ ধরা পড়েছে মৎস্যজীবীদের জালে। প্রায় সমস্ত ট্রলার সমুদ্র থেকে ভালো পরিমাণের ইলিশ মাছ নিয়ে আসতে শুরু করেছে।
এমনকি যারা ছোট ট্রলার নিয়ে প্রতি দিন মাছ ধরে, তারাও পর্যন্ত প্রচুর ইলিশ মাছ নিয়ে আসছে এই মুহূর্তে। এত পরিমাণ মাছ এক সাথে বাজারজাত করতে একসঙ্গে পাঠাতে হয় ডায়মন্ড হারবার অকশন মার্কেটে। মাছ ধরে এনে জাল থেকে ছাড়িয়ে মার্কেটে পৌঁছাতে যে সময় লাগে, তার মধ্যেই বহু মাছ অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়। ফলে মাছের দামও ভালো পাওয়া যায় না। সেই সমস্যা সমাধানের জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগনার সব থেকে বড় মৎস্য বন্দরে তৈরি করা হয়েছিল কোল্ড স্টোরেজটি।
কিন্তু পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে তালা বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে এই স্টোরেজটি। মৎস্যজীবীদের জন্য বানানো কোটি কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি এখন পড়ে পড়ে নষ্ট হতে শুরু করেছে। এছাড়াও মৎস্য বন্দরের খালটির নাব্যতা কমে যাওয়ার কারণে জোয়ার ছাড়া দিনের অন্য সময়ে কোনও ট্রলার বন্দরে ঢুকতে পারে না। স্বাভাবিকভাবেই কাকদ্বীপের মৎস্যজীবীদের কাছে গুরুত্ব হারাতে শুরু করেছে এই মৎস্য বন্দরটি।
এ বিষয়ে সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র জানান, “তিন চার বছর বাদে মৎস্যজীবীরা একটু মাছের মুখ দেখেছে। বেশ কিছু ছোট ছোট ট্রলারও প্রচুর পরিমাণের মাছ নিয়ে আসছে। একসঙ্গে অনেক মাছ পড়ে গেলে আমাদের বাজারজাত করতে অসুবিধা হয়। কোল্ড স্টোরেজটি এই সময় পাওয়া গেলে মাছগুলিকে কিছু সময়ের জন্য স্টোর করে রাখা যেত। পরে মৎস্যজীবীরা ভালো দামে বিক্রি করতে পারত।
কিন্তু কী কারণে এই স্টোরেজটি চালু করা যায়নি আমরা জানি না। এই বিষয়গুলো নিয়ে বারে বারে মৎস্য দপ্তরকে জানিয়েও কোনওরকম কাজ হয়নি। তবে এবিষয়ে কাকদ্বীপ বিধানসভার বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা বলেন, “মৎস্য দপ্তরের উদ্যোগে কাকদ্বীপ মৎস্য বন্দরে একটি কোল্ড স্টোরেজ তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু কিছু প্রযুক্তিগত কারণে স্টোরেজটি আজও পর্যন্ত চালু করা যায়নি। এই বিষয়ে বর্তমান মৎস্য মন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। যাতে স্টোরেজটি দ্রুত চালু করা যায়। সেই বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করার কথাও বলা হয়েছে।
next post