মথুরাপুর, ৩১জুলাই: পঞ্চসায়র কিডন্যাপ কাণ্ডে নয়া মোড়। দেড় দিন পরে বাড়ি ফিরে পুরো বয়ানই বদলে ফেলেছেন অপহৃতরা। ফের একবার বিস্ফোরক অভিযোগ উঠছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পঞ্চায়েত নিজেদের দখলে রাখতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে শাসক শিবির। ২৭ জুলাই শনিবার গভীর রাতে বিজেপির তিন প্রার্থী ও সিপিএম সমর্থিত এক নির্দল প্রার্থীকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় পঞ্চসায়র থানায় ইতিমধ্যেই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সিপিআইএম এর বর্ষীয়ান নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। এরই মধ্যে পঞ্চসায়র থানায় আসা একটি চিঠির বয়ানে ওই চার জয়ী প্রার্থী জানিয়েছিলেন, তাঁদের কেউ অপহরণ করেনি। তাঁরা স্বেচ্ছাতেই গিয়েছিলেন। যদিও পুলিশ সূত্রে খবর, চারজনকে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় দেখা গিয়েছে। যদিও বাড়ি ফেরার পর তাদের দাবি জোর করে তাঁদের দিয়ে ওই বয়ান লিখিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
রবিবার সকালে কৃষ্ণচন্দ্রপুরের অন্ধমুনিতলা গ্রামের ৫৬ নম্বর বুথের বিজেপি প্রার্থী পুজা ছাঁটুইয়ের বাড়িতে এসে অপহৃত বিজেপি প্রার্থীদের দেখা গেল। শনিবার রাতের ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সুশান্ত মন্ডল নাম এক বিজয়ী বিজেপি প্রার্থী বলেন,’ আমরা কলকাতার এক গেস্টহাউস ভাড়া করে ছিলাম। ২৭ জুলাই রাতে যখন আমরা খাওয়া-দাওয়া করছিলাম তখন হঠাৎই তৃণমূলের কিছু দুষ্কৃতী গাড়ি নিয়ে চলে আসে। আমরা প্রথমে বুঝতে পারিনি কী হচ্ছে। আচমকা আমাদেরকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ওখান থেকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। প্রায় ১০ মিনিট পর গাড়িটা যেখানে থামে সেখানে আমাদের প্রধান বাপি হালদারকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি। তারপর নদী পার করে আমাদের একটি ফ্ল্যাটে রাখা হয়। সেখানেই আমাদের দিয়ে জোর করে লিখিয়ে নেওয়া হয়, আমরা স্বেচ্ছায় এখানে এসেছি। আমাদের কেউ অপহরণ করেনি।
প্রসঙ্গত, কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৫ আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে চারটি আসন। বিজেপির খাতায় ছটি আসন। সিপিএমের খাতায় তিন ও সিপিএম সমর্থিত নির্দলদের খাতায় দুইটি আসন। অভিযোগ, ভোট গণনার পরেই শাসকদলের হুমকির মুখে পড়েন বিরোধী শিবিরের ১১ জন জয়ী প্রার্থী। সকলেই ভয়ে এলাকা ছাড়েন। কিন্তু বোর্ড গঠনের কথা শুরু হতেই তাঁরা ঘরে ফেরার তোড়জোড় করছিলেন বলে শোনা যায়। এরইমধ্যে বিরোধী শিবিরের চার প্রার্থীকে অপহরণ করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও এই বিষয়ে তৃণমূলের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।