কাঠমাণ্ডু: নেপালের বিমান দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৮। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন ৫ জন ভারতীয় নাগরিক। তাঁরা হলেন অভিষেক কুশওয়াহা, বিশাল শর্মা, অনিলকুমার রাজভড়, সোনু জয়সওয়াল ও সঞ্জয় জয়সওয়াল। তাঁদের মধ্যে চারজন গাজিপুরের বাসিন্দা। তাঁরা সবাই উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। তাঁরা নেপালে ঘুরতে গিয়েছিলেন। ৬৮ জনের দেহ উদ্ধার হলেও এখনও হদিশ মেলেনি বাকি চার জনের। ইয়েতি এয়ারলাইন্সের ATR-72 বিমানটিতে ৬৮ জন যাত্রী ও ৪ জন বিমান কর্মী ছিলেন। যাত্রীদের মধ্যে ১৫ জন বিদেশী ছিলেন। বিমানের মধ্যে কোনও ভারতীয় ছিল কিনা সেই ব্যাপারে জানা যায়নি।
বিমানটি কাঠমান্ডু থেকে পোখরা যাচ্ছিল। আজ সকাল ১০টা ৩৩ মিনিটে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমানটি যাত্রা শুরু করে। পোখরা বিমানবন্দরে অবতরণের দশ সেকেন্ড আগে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। পুরাতন বিমানবন্দর এবং পোখরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মধ্যে প্রবাহিত হয়ে চলেছে সেতি গন্ডকি নদী। সেই নদীর তীরে একটি বনভূমি পেরনোর সময় বিমানটিতে আচমকা আগুন ধরে যায়। এরপর সেটি বিধ্বস্ত হয়ে খাদে পড়ে। মাত্র ৮ মিনিটের ব্যবধানে সব নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।
ব্ল্যাকবক্স উদ্ধার না হয় অবধি দুর্গটনার প্রকৃত কারণ জানা সম্ভব হচ্ছে না। তবে ঘটনাচক্রে বিমানের ভিতরে ভারতীয় যাত্রীদের একটি লাইভ ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, পোখরা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের রানওয়েতে নামার ঠিক আগের মুহূর্তে বিমানে বসে যাত্রীরা নেপালের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ক্যামেরাবন্দি করছিলেন। তাঁরা সেখানকার প্রাকৃতিক উপভোগ করছেন, ঠিক সেই মুহূর্তে আচমকা ঘটে বিপত্তি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বিমানটিতে আগুন ধরে যায় ও ভেঙে পড়ে। যাত্রীরা আর্তনাদ করারও সময় পাননি।
উত্তরপ্রদেশের জেলাশাসক আর্যকা আখৌরি জানান, প্রশাসনের তরফে মৃতদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। মহকুমা শাসক এবং অন্যান্য আধিকারিকরা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করছেন। ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছে। দেহ উদ্ধারের পর বাকি পদক্ষেপ করা হবে।
এই ঘটনায় নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহাল গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে জরুরি ভিত্তিতে মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকেন তিনি। ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, ‘নেপালের মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় শোকাহত। যে দুর্ঘটনায় ভারতীয়-সহ অনেকে মারা গিয়েছিল। শোকের সময় মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।’ ভারতের অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিমান দুর্ঘটনার খবরে দুঃখপ্রকাশ করেছেন।