22 C
Kolkata
December 25, 2024
কলকাতা

নারায়ণ-বীণায় রক্তাক্ত স্বরূপনগরের তৃণমূল-১

সুভাষ পাল, বিথারী: একদিকে তৃণমূলের প্রথম আমলের নেতা নারায়ণ গোস্বামীর গোষ্ঠী, আর অন্যদিকে বর্তমানে স্বরূপনগর ব্লক ও জেলায় সবচেয়ে শক্তিশালী নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি বীণা মণ্ডলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে জেরবার স্বরূপনগরের তৃণমূল। নারায়ণ গোস্বামী বর্তমানে অশোকনগরের বিধায়ক ও জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ। আবার বীণা মণ্ডল স্বরূপনগর তথা বনগাঁ লোকসভা ক্ষেত্রের একমাত্র তৃণমূল বিধায়ক এবং জেলা পরিষদের সভাধিপতি। একপক্ষ আর এক পক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ নিয়ে বারবার উত্তপ্ত হয়ে উঠছে স্বরূপনগরের মাটি। সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা ছড়াচ্ছে স্বরূপনগরের উত্তর ব্লককে কেন্দ্র করে। আর সেই উত্তেজনার ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছে রানী রাসমণির সেজো জামাই মথুরামোহনের বিথারী-হাকিমপুর গ্রামপঞ্চায়েত।

এখানকার নারায়ণপন্থী নেতা রেজাউল মন্ডলের সঙ্গে বীণাপন্থী নেতা জিয়াউর রহমান মোল্লা ও আনিস উদ্দিন গাজীদের সংঘাত ক্রমশঃ বেড়েই চলেছে। সূত্রের খবর, বিথারী-হাকিমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বীণা পন্থীরা নারায়ণপন্থী নেতাদের কোণঠাসা করতেই এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সূত্রপাত। গতকাল সোমবার এরকমই একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ। এদিন রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ বিথারী বাজারের কাছে উত্তর ব্লকের পার্টি অফিসেই দুই পক্ষের বাদানুবাদ শুরু হয়। পরে পার্টি দপ্তর ও সংলগ্ন এলাকা রীতিমতো সংঘর্ষের রূপ নেয়।

কিন্তু কী থেকে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হল? এপ্রসঙ্গে নারায়ণপন্থী বলে পরিচিত তৃণমূল নেতা রেজাউল মণ্ডল বলেন, বিথারী বাজারের উত্তর দিকের ১০৭ নম্বর বুথের সভাপতি শেখ আনারুলকে সরিয়ে ফারুক সর্দারকে বুথ সভাপতি করা থেকে এই ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। অভিযোগ, শেখ আনারুলকে সরিয়ে যাঁকে সভাপতি করা হয়েছে, তিনি মাদক মামলায় অভিযুক্ত। এমনকি তিনি কিছুদিন আগে সেন্ট্রাল জেলে বন্দীও ছিলেন। বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত।

সম্প্রতি সেই ঘটনাকে সোশ্যাল মিডিয়াতে তুলে ধরেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিথারী-হাকিমপুর অঞ্চলের সভাপতি সৌভিক পাল। দাবি, তিনি ফেসবুকে অভিযোগ করেন, ১০৭ নম্বর বুথে একজন জেল খাটা আসামিকে বুথ সভাপতি করা হল, তৃণমূলে কি আর কোনও ভালো লোক নেই? এই পোস্টকে ঘিরে সরব হয়ে ওঠেন তৃণমূলের বীণাপন্থী নেতা কর্মীরা। তাঁরা বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো নিয়ে প্রতিবাদ জানাতেই সংঘর্ষের রূপ নেয়। সংঘর্ষে আক্রান্ত হন জিয়াউর রহমান মোল্লা, আনিস উদ্দিন গাজী সহ একাধিক ব্যক্তি। ঘটনায় দুই পক্ষের ৯ জন আহত হয়েছেন। যার মধ্যে ৬ জন নারায়ণপন্থী ছাত্র ও যুব নেতা। বীণাপন্থীদের মধ্যে বাকি ৩ জন রয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। যাঁদের অনেকেই এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অভিযোগ, এক পক্ষ আর এক পক্ষকে লোহার রড নিয়ে আক্রমণ করে। অনেকের মাথা ফাটে। অনেকের হাঁটুতে গুরুতর আঘাত লাগে।

ক্রমশঃ

Related posts

Leave a Comment