শঙ্কর মণ্ডল: একমাস উপবাসের পর আজ মুসলিম ধর্মপ্রাণ মানুষেরা তাঁদের ধর্মীয় উপাসনায় নিয়োজিত হবেন সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু এই ধর্মীয় মঞ্চকে রাজনৈতিক মঞ্চে পরিণত করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘৃণ্য রাজনীতির যে নজির সৃষ্টি করলেন, তার জন্য জানা তীব্র ধিক্কার! সেই সঙ্গে ঐ ধর্মীয় উপাসনা পরিচালনা করা মুসলিম ধর্মের মাথাদের প্রশ্ন করতে চাই, এটাই কি মুসলিম ধর্মপ্রাণ মানুষদের প্রতি আপনাদের নবীর মহাত্ম তুলে ধরার নিদর্শন? প্রত্যেক ধর্মের মানুষের নিজ নিজ রাজনৈতিক মতপ্রকাশের অধিকার রয়েছে।
ধর্মীয়, আধ্যাত্মিক কর্মকাণ্ডে অবশ্যই কোনও সাংবিধানিক পদে থাকা মানুষ উপস্থিত হতে পারেন। সেখানে তিনি রাজনৈতিক বক্তব্য পেশ করতে পারেন না। আর সিএএ, এনআরসি ও অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে যে মিথ্যা ভাষণে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ঐ ধর্মীয় মঞ্চকে পুরোপুরি নির্বাচনী প্রচারের মঞ্চে পরিণত করলেন, তাতে আগামী দিনে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া হওয়াটা অবশ্যম্ভাবী।
আর অন্যদিকে সৌজন্যের রাজনীতির উদাহরণ তৈরি করতে ঈদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কোথাও সিপিএম, কোথাও তৃণমূল, কোথাও দিলীপ ঘোষ যে নাটুকেপনা করলেন, তা কতটা সৌজন্যমূলক, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। কিন্তু এখানেও মাথায় টুপি পরে, মুসলিমদের কাছে পেতে বকলমে তাঁদের অসম্মানই করলেন।
যাই হোক, আমি আজকের দিনে মুসলিম সম্প্রদায়ের শুভ বুদ্ধির উদয় হওয়ার প্রার্থনা করে ও নিজের পুলিশকে প্রশ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে বিবৃতি দেওয়া ফিরহাদ হাকিমের সুস্থতা কামনা করি। যদিও ফিরহাদ হাকিমের কথা মতো এই রাজ্যের ট্রাফিক পুলিশকে সত্যিই কেউ মানে না। তবে সেটার জন্য এই রাজ্যের সরকারই দায়ী। আর সন্দেশখালি নিয়ে তদন্ত বা পাহাড়ের দুর্নীতি নিয়ে নতুন করে ছাত্র নেতার নাম উঠে আসার মাধ্যমে এটাই প্রমাণ করে, তৃণমূলের সবাই চোর।
এই অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতির মধ্যে যখন সিপিএমের লোকজন চিৎকার করে তাঁদের মহাত্ম প্রমাণের চেষ্টা করে, তখন ওদের অপকর্মের উদাহরণ নিয়ে একটা প্রদর্শনীর আয়োজন করতে ইচ্ছা করে। আর তার জন্য চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য পেশ করতে প্রস্তুত। আর সর্বশেষ সমালোচনা হয়তো আমার কিছু অন্ধ ভক্তদের খারাপ লাগতেই পারে। তার জন্য আমার কিছু করার নেই। সেটা হল, এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষ বিজেপিকে সমর্থন করবেন বলে বসে আছেন। কিন্তু একদল অবাঞ্ছিত অতিথিদের ও একদল অশিক্ষিত টাকা মারার জন্য অপেক্ষারত লোকেদের হাতে পার্টির দায়িত্ব তুলে দিয়ে মানুষকে বিজেপি-র স্পর্শ পাওয়া থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
বক্তা একজন প্রাক্তন বিজেপি নেতা। এই প্রবন্ধে সমস্ত মতামত তাঁর ব্যক্তিগত।
previous post