27 C
Kolkata
April 12, 2025
দেশ

দিল্লিতে অখিলেশের বাড়িতে অভিষেক, অভিষেকের বাড়িতে উপস্থিত ‘আপ’ নেতারা

নিজস্ব সংবাদদাতা, নতুন দিল্লি: ভোট মিটতেই ‘ইন্ডিয়া’ জোটের ভালো ফলাফল তাক লাগিয়েছে ভারতবাসীকে। আর তাতেই দেশজুড়ে বিজেপি-র বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা দেখছে বিভিন্ন বিজেপি বিরোধী দলগুলি। ঘর গোছাতে শুরু করেছে ‘ইন্ডিয়া’ থেকে ‘এনডিএ’। এর মধ্যেই সময় ব্যয় না করে তৃণমূলের দূত হয়ে দিল্লিতে ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে হাজির হয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার রাতেই দিল্লিতে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে হাজির ছিলেন অভিষেক এবং সমাজবাদী পার্টি (এসপি)-র শীর্ষ নেতা অখিলেশ সিং যাদব। তার কয়েক ঘণ্টা পরেই বৃহস্পতিবার সকালে অখিলেশ যাদবের বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সকাল ১০টা নাগাদ তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েনকে সঙ্গে নিয়ে অভিষেক পৌঁছন অখিলেশের বাড়িতে। এরপরই অখিলেশের বাড়িতে প্রায় ৪০ মিনিট ধরে চলে ‘ইন্ডিয়া’র দুই অন্যতম প্রধান শরিকের শীর্ষনেতার বৈঠক। এখানেই শেষ নয়, অখিলেশের সঙ্গে বৈঠক শেষে বৃহস্পতিবার বেলার দিকে দিল্লিতে অভিষেকের বাড়িতে যান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল আম আদমি পার্টির দুই শীর্ষনেতা সঞ্জয় সিংহ এবং রাঘব চড্ডা। তিন নেতা একসঙ্গে বৈঠকে বসেন।

তবে দুটি বৈঠক প্রসঙ্গে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এগুলি ‘সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ’। তবে শুধু কি তাই? ভোটে দুর্দান্ত ফলাফলের পর বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র শরিক দলগুলির মধ্যে সমান্তরাল কোনও সমীকরণ তৈরি হচ্ছে কি না, তা নিয়ে একাংশের মধ্যে জল্পনা শুরু হয়েছে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকালে অভিষেক অখিলেশের বাড়িতে পৌঁছনো মাত্রই তাঁকে স্বাগত জানাতে বাড়ির প্রবেশদ্বার পর্যন্ত এগিয়ে আসেন অখিলেশ। তাঁর কাঁধে হাত রেখে নিয়ে যান বাড়ির ভিতরে। এমন ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে লেখা হয়, “জাতি বিদ্বেষী, ধর্ম বিদ্বেষী বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়াই জারি থাকবে আগামী দিনেও।” ইন্ডিয়ার বৈঠকের পরেই অখিলেশ এবং অভিষেকের এই বৈঠক ঘিরে জল্পনা শুরু হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, বিরোধী জোটের বৈঠকের পরও ইন্ডিয়ার অন্যতম শরিক দুই দল সমাজবাদী পার্টি এবং তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষনেতার আলাদা করে এই সাক্ষাৎ তাৎপর্যপূর্ণ।

বুধবারের বৈঠকে ‘ইন্ডিয়া’ জোট সিদ্ধান্ত নেয় যে, আপাতত কেন্দ্রে সরকার গড়া তাঁদের লক্ষ্য নয়। পরিবর্তে তাঁরা ঐক্যবদ্ধ বিরোধী হিসাবে দেশের মানুষের জন্য কাজ করবেন এবং তাঁদের রাজ্যের জন্য দাবি আদায় করে আনবেন। তাই এই বৈঠক সেই ঐক্যেরই প্রতীক বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কংগ্রেসের পরে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’-কে সবচেয়ে বেশি আসন এনে দিয়েছে অখিলেশের দল সমাজবাদী পার্টি। লোকসভায় উত্তরপ্রদেশে ৩৭টি আসন জিতে বিজেপি-র মেরুদন্ড ভেঙেছে তারা। তারপরেই রয়েছে ২৯টি আসন পাওয়া তৃণমূল। বঙ্গে বিজেপি-র ভীত নাড়িয়েছেন তাঁরা।

যদিও আসনের নিরিখে ‘ইন্ডিয়া’য় দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে থাকা এই দুই দলের শীর্ষনেতার বৈঠক নিয়ে আলাদা করে অভিষেক বা অখিলেশ কেউই কিছু জানাননি। ইন্ডিয়ার দলগুলির মধ্যে এসপি এবং আপ-এর সঙ্গে তৃণমূলের বোঝাপড়া তুলনামূলক ভালো। সেই সম্পর্কের কথা মাথায় রেখেই এবার উত্তরপ্রদেশের ভদোহী কেন্দ্রটি তৃণমূলের জন্য ছেড়ে দিয়েছিলেন অখিলেশ।

যদিও সেই আসনে জয়লাভ করে বিজেপি। অন্যদিকে, এবারের লোকসভা নির্বাচনে দিল্লিতে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে লড়ে একটি আসনও পায়নি আপ। তবে পঞ্জাবে তারা তিনটি আসনে জয় পেয়েছে। বুধবার রাতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের বাসভবনে ইন্ডিয়ার বৈঠকের পরও পৃথকভাবে আপ-এর সঙ্গে তৃণমূলের এবং এসপি-র সঙ্গে তৃণমূলের সাক্ষাৎ ও বৈঠক জাতীয় রাজনীতিতে তাৎপর্যপূর্ণ হতে পারে। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

Related posts

Leave a Comment