30 C
Kolkata
June 16, 2025
রাজ্য সম্পাদকীয়

‘তোমারে বধিবে যে, গোকুলে বাড়িছে সে’

শঙ্কর মণ্ডল

আদালতের রায়কে বিকৃত করে দেখিয়ে, পুরো তালিবানি কায়দায় দুষ্কৃতীকারীর ন্যায় এই রাজ্যের পুলিশের আচরণ গণতন্ত্রপ্রিয় রাজনৈতিক সচেতন মানুষের হাড় হিম করে দেয়। রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকতেই পারে। তাই সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি, তৃণমূল একে অপরের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখবে। সেটা নিয়ে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু চাকরি প্রার্থীদের অহিংস আন্দোলনের ওপর ১৪৪ ধারা দেখিয়ে, রাতের অন্ধকারে যেভাবে পুলিশ নির্মমভাবে আন্দোলন ভাঙতে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করল, তা এই রাজ্যের সরকারের দেউলিয়াপনা প্রমাণ করে। যদিও তাঁরা ১৪৪ ধারার নিয়ম অনুযায়ী পাঁচজন করে ভাগ হয়ে গিয়েছিলেন। এই আন্দোলনকারীদের বেআইনি গ্রেফতার করে কয়েদীদের সঙ্গে এক ঘরে রেখে একটা নিদর্শন তৈরি করল তৃণমূলের পুলিশ। যা ব্রিটিশ আমলে ইংরেজ পুলিশ স্বাধীনতা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে করত।

অপর্ণা সেন থেকে শুরু করে কৌশিক সেনরা মানে তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা এর প্রতিবাদে টুইট করছেন। জানি না, এঁরা কবে পথে নামবে বা আদৌ নামবে কিনা! কারণ, বিভিন্ন শ্রী ও ভূষণে ভূষিত হতে এঁরা এখন অভ্যস্ত। সিপিএম আমলেও পুলিশের আচরণ খুব ভাল ছিল, এরকমটা কিন্তু নয়। আজকে ওদের ছাত্র, যুবরা যতই চিৎকার করুক, এর প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা আমার আছে। আর এই দলদাসত্ব করতে করতে এই রাজ্যের পুলিশের কর্মক্ষমতা একেবারেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এবং এখন এই পুলিশে আদৌ কোনও ভদ্রলোক আছে কিনা সন্দেহ। তাই এদের সামাজিকভাবে ভদ্রলোকেদের দূরত্ব বজায় রাখা উচিত। এদের সঙ্গে ছেলেমেয়েদের বিবাহ দেওয়া থেকে বিরত থাকাই সমীচীন।

অন্যদিকে এই তৃণমূল ভুলে গেছে ২০০৬ সালেও কিন্তু সিপিএম ২৩৫ টি আসন জিতেছিল, আর তারপর ২০০৭ থেকে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম বিভিন্ন আন্দোলনকে গায়ের জোরে ভেঙে দেয়। এমনকি নির্বিচারে মানুষকে খুন করে লাশ গায়েব থেকে শুরু করে মহিলাদের ধর্ষণ কোন কিছুকেই বাদ দেয়নি সেইসময়। হ্যাঁ, সবকিছু পরবর্তীকালে প্রমাণ করা যায় নি। আর বর্তমান সরকারের সেই সদিচ্ছাও ছিল না। কারণ, ওই কুকর্ম যারা করেছিল, তাদের অধিকাংশই যেহেতু তৃণমূলে যোগ দিয়েছিল সেজন্য।

কিন্তু, আমি যেটা বলতে চাইছিলাম, সেটা হল সিপিএম তার পতন আটকাতে পারে নি। সুতরাং তৃণমূল যেন ইতিহাস ভুলে না যায়। তারাও অপরাজেয় নয়। নেহাত বিজেপি অপদার্থদের মাধ্যমেই দল চালাচ্ছে। পাশাপাশি, তৃণমূলের কুচক্রের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। সেজন্য তারা বেঁচে যাচ্ছে। ২০২১ -এ তৃণমূলের চক্রান্তের শিকার হয়েই বিজেপি হেরেছে। কিন্তু এই অবস্থা চিরকাল থাকবে না। আর সিপিএম যতই লাফালাফি করুক, বাংলার মানুষ ওদের আইডিওলজি ও রাজনীতি কখনোই আর সমর্থন করবে না। সনাতনী ঐক্য আগামী দিনে আপনাদের অবশ্যই শিক্ষা দেবে। ভুলে যাবেন না, সেই মহাভারতের ঐতিহাসিক মন্তব্য, তোমারে বধিবে যে, গোকুলে বাড়িছে সে।

লেখক সংযুক্ত হিন্দু ফ্রন্টের সভাপতি। মতামত ব্যক্তিগত।
(
বিশেষ দ্রষ্টব্য:
এই পাতায় আপনার স্বাধীন মতামত সাদরে গ্রহণযোগ্য। যে কেউ তাঁর রাজনৈতিক ও সামাজিক মতামত প্রকাশ করতে পারেন। লেখা পাঠাতে ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল আই ডি: sangbadkolkata@gmail.com)

Related posts

Leave a Comment