ইস্তানবুল: সোমবার ভোররাতে পর পর দুই বার তীব্র ভুমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক ও সিরিয়া। ইরাক, সাইপ্রাস, লেবানন-সহ আশপাশের বেশ কয়েকটি দেশেও তীব্র কম্পন অনুভূত হয়। এমনকি সুদূর গ্রিনল্যান্ডে পর্যন্ত এর তীব্রতা ছড়িয়ে পড়ে। হুড়মুড়িয়ে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে বহুতলগুলি। রাস্তার দুধারে একের পর এক বাড়িগুলি ভেঙে পড়তে দেখে দিশেহারা হয়ে যান পথ চলতি মানুষ ও প্রাতঃভ্রমণকারীরা। অধিকাংশ মানুষ ঘুমিয়ে থাকায় কিছু বুঝে ওঠার আগেই সব ধ্বংস হয়ে যায়। নিমেষে রাস্তার ধারে শহরের বহুতলগুলি ভেঙে কংক্রিটের পাহাড়ে পরিণত হয়। ঘুমের মধ্যে ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে প্রাণ হারান বহু মানুষ। রাতে সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭,০০০। জখম হয়েছেন আরও অসংখ্য মানুষ। প্রচুর মানুষ ধ্বংসস্তূপের তলায় চাপা পড়ে আছে। ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে কোথায় গিয়ে পৌঁছাবে তা সকলেরই অজানা। যদিও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ধারণা, এই মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩০ থেকে ৩৫ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছতে পারে। এদিকে মঙ্গলবার সকালেও জোরালো ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ৫.৮।
প্রসঙ্গত ভোর সাড়ে ৪টের মধ্যে তুরস্কের দক্ষিণ পূর্ব এলাকায় দুই বার কম্পন অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৭.৮ ও ৬.৭। কিন্তু, এখানেই এই প্রাকৃতিক ধ্বংসলীলার শেষ নয়। দুপুর ১টা ২৪ মিনিটে ফের ভূকম্পন অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৭.৫। সন্ধ্যার দিকে ৬ মাত্রার আরও একটি শক্তিশালী ভূকম্পন অনুভূত হয়। উদ্ধারকারীরা জমে থাকা তুষারাবৃত ধ্বংসস্তূপের পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে জীবিতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। তুরস্কের রাস্তা বরফে ঢাকা থাকায় বহু জায়গায় উদ্ধার কাজ চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। আকাশে বাতাসে শুধুই কান্নার রোল। গত ১০০ বছরের মধ্যে তুরস্ক ও সিরিয়ায় এটিই সবচেয়ে জোরালো ভূমিকম্প বলে মত বিশেষজ্ঞদের। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক সংস্থা জানিয়েছে, স্থানীয় সময় 04:17 (01:17 GMT) গাজিয়ানটেপ শহরের কাছে 17.9 কিলোমিটার (11 মাইল) গভীরতায় 7.8 মাত্রার কম্পনটি আঘাত হানে।
এদিকে ভারতের ১৪০ কোটি দেশবাসীর পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ ও সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি তুরস্কের এই পরিস্থিতিতে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। সাউথ ব্লকে একটি জরুরি বৈঠকের পর জানানো হয়েছে, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১০০ জনের দুটি দল যাবে তুরস্কে। ওষুধ সহ চিকিৎসকরা থাকবেন এই দলে। থাকবে ডগ স্কোয়াড। উদ্ধার কাজে সঙ্গে নেওয়া হবে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম।
next post