April 9, 2025
কলকাতা

তিন দশক কারাবাস কাটিয়ে বড়বাজার কান্ডের খালিদ সমাজের মূল স্রোতে ফিরতে চান

সংবাদ কলকাতা :– কলকাতার বড়বাজার বিস্ফোরণ মামলায় এক আসামির তিন দশক কেটে গিয়েছে কারাগারে৷ ‘এবার বন্দিজীবন শেষ করে সমাজের মূল স্রোতে ফেরানো হোক বউবাজারের মহম্মদ খালিদকে’৷ সম্প্রতি রাজ্যকে এমনই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট৷ বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের বেঞ্চের নির্দেশ, মেয়াদ শেষের আগেই মুক্তি দিতে হবে বউবাজার বিস্ফোরণে খালিদকে৷ যদিও এই রায় কার্যকর করার ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা আছে বলে পালটা দাবি রেখেছে রাজ্য৷ যার জেরে চার সপ্তাহের জন্য ওই রায় কার্যকরে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে৷ আদালত সুত্রে প্রকাশ, গত ১৯৯৩ সালের ১৬ মার্চ গভীর রাতে ২৬৭ বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের দোতলা বাডি়টি ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণে গুঁডি়য়ে যায়৷ মৃত্যু হয় ৬৯ জনের৷ সেই মামলায় একদা কলকাতার সাট্টা কারবারের ডন রশিদ খানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়৷ তদন্তে বলা হয়, রশিদ খানের কাছে যে পরিমাণ বিস্ফোরক ছিল, তা গোটা কলকাতা উড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট৷ মহম্মদ খালিদ সেই রশিদের ছায়াসঙ্গী৷ ওই মামলায় তাঁকেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত৷ কয়েক বছর আগে খালিদ জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার দাবিতে রাজ্য সরকারের ‘সেনটেন্স রিভিউ বোর্ডে’ আবেদন করে৷ সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়৷ এরপর কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় খালিদ৷ খালিদের দাবি, ‘তিন দশকের জেল জীবনে তাঁর চারিত্রিক পরিবর্তন হয়েছে৷ এবার সে সমাজের মূলস্রোতে ফিরতে চায়’৷ চলতি সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্ট জানায়, ‘১৫ দিনের মধ্যে খালিদকে মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিক সেনটেন্স রিভিউ বোর্ড’৷ বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের বেঞ্চ জানিয়েছে, “এ ক্ষেত্রে স্পষ্ট যে আবেদনকারীর ৩ দশকের চারিত্রিক পরিবর্তন সরকারের দৃষ্টি এড়িয়ে গিয়েছে৷ তার অতীতের ছায়া যদি বর্তমানের উপর এতটা প্রভাব ফেলে তাহলে সেটা অনভিপ্রেত৷ তাছাড়া শাস্তি দেওয়ার মূল উদ্দেশ্যই তো অপরাধীকে শুধরে সমাজের মূল স্রোতে ফেরানো৷” এমনিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিতদের মুক্তি দিতে রাজ্য সরকারের একটি ‘সেনটেন্স রিভিউ বোর্ড’ বা সাজা পুনর্বিবেচনা পর্ষদ রয়েছে৷ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া বন্দির আচার-ব্যবহার কেমন, কতটা বদল হয়েছে তাঁর মানসিকতার, তিনি যে-অপরাধে জেল খাটছেন, সেই সাজা এত দিনে যথেষ্ট হয়েছে কি না? ইত্যাদি বিষয় তাঁর মুক্তির ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ সাধারণত সাজা খাটার ১৪ বছর পরে সরকারের সাজা পুনর্বিবেচনা পর্ষদ সংশ্লিষ্ট বন্দির মুক্তির বিষয়টি পর্য্যালোচনা করে৷ খালিদের ক্ষেত্রে জেলযাত্রার পর ৩১ বছর কেটেছে৷ সেটা বিবেচনা করেই ১৫ দিনের মধ্যে তাকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে আদালত৷ সব ঠিক থাকলে দ্রুত সে মুক্তিও পাবে৷ তবে, রাজ্য সরকারের আপত্তিতে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়া সাময়িক পিছিয়ে গেছে৷ এখন দেখার কয়েক সপ্তাহ পর খালিদ নিয়ে রাজ্য কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে?

Related posts

Leave a Comment