24 C
Kolkata
April 17, 2025
সম্পাদকীয়

জয়প্রকাশ একজন ভাড়ায় খাটা নেতা

শঙ্কর মণ্ডল

৮৬ বছরের অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী শক্তিপদ চক্রবর্তী। ডিএ চেয়ে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে পুলিশের হাতে মার খেলেন। এই আন্দোলন যাঁরা করেছে, তাঁদের রাজনৈতিক পরিচয় আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাঁদের রাজনৈতিক মতাদর্শকে সমর্থন করার কোনও প্রশ্নই নেই। কিন্তু ওদের আন্দোলনরত লোকেরা কিন্তু নিরস্ত্র ছিলেন। এব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই। এখানেও পুলিশ ঘুষি পর্যন্ত মেরেছে। যা পুলিশের চরিত্রের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বেমানান। তাছাড়া ঘুষি যিনি মারছেন, সেই পুলিশ কিন্তু ইউনিফর্ম পরে ছিলেন না। একটা লাল জামা পরেছিলেন। এরও তদন্ত হওয়া দরকার। উনি সত্যিই পুলিশ তো? নাকি তৃণমূলের হার্মাদ? আর এবিষয়ে পুলিশকে ডিফেন্ড করতে গিয়ে ভাড়ায় খাটা নেতা জয়প্রকাশ যেসব কথা বলছেন, তাতে ওঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন করা যায়। কারণ, আইনি বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে সবটাই বেআইনি কথা বলে ফেললেন। এমনকি তৃণমূলের বিধানসভা ভাঙচুর প্রসঙ্গে বলার সময় বহিরাগত তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে মমতা ব্যানার্জি যে বিধানসভার সদস্য ছিলেন না, সেটাই ভুলে গেলেন। আর পুলিশ যে আন্দোলন ভাঙ্গার কাজ করার জন্য কাউকে কামড়ে দিতে বা কাউকে ঘুষি মারতে পারে না, সেটা এই মূর্খ তৃণমূলের চটি চাটা নেতাগুলোর জানা সম্ভব নয়। এই রাজ্যের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও প্রশাসনিক দেউলিয়াপনা এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যাকে মেরামত করা বা গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করা এই সরকার তথা মমতা ব্যানার্জিকে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসিয়ে কোনওভাবেই সম্ভব নয়। তা যতই মুখ্যমন্ত্রী স্বঘোষিত শ্রেষ্ঠ প্রশাসকই হন না কেন। আর ডিএ আন্দোলন প্রসঙ্গে একটা বিষয় উল্লেখ করতে চাই। সেটা হল যাঁরা এই রাজ্য সরকারকে সমর্থন করতে গিয়ে হাতরাশ, লখিমপুর ইত্যাদি নিয়ে চেঁচামেচি করে, তাঁদের জানা দরকার ঐ রাজ্যের পুলিশ এইভাবে দলদাসত্ব করে না। অপরাধীদের শাস্তি হয়। আর ঐ রাজ্য ৩৮% ডিএ দেয়। আর স্বর্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গে ৩% ডিএ দেওয়া হয়।

এছাড়া এইভাবে রোজ আদালতকে সরকারের বিরুদ্ধে রায় দিতে হয় না। প্রতিক্ষেত্রেই দেশের সর্বোচ্চ তদন্ত কমিশন সিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিতে হয় না দেশের অন্য কোনও রাজ্যে। আর কেবলমাত্র ভোটে জিতলেই সমস্ত রকম অপরাধের ছাড়পত্র পাওয়া যায় বা কেউ সরকারের সমালোচনা করতে পারবে না। এটা গণতন্ত্রের কোথায় এর প্র্যাকটিস আছে বা সংবিধানের কোন ধারায় এটা বলা আছে? সেটা এই পণ্ডিতদের থেকে কেউ জানালে বাধিত হব।

আর এই আর্টিকেল লিখতে গিয়ে একটি আশঙ্কার কথাও উল্লেখ করতে হচ্ছে। সেটা হল এই ডিএ আণ্দোলনের দিন গিরিশ মঞ্চে একটা নাটক চলাকালীন আচমকা আগুন লেগে গেল। যেটা নিয়ে জানিনা পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে কিনা! কাকতলীয়ভাবে দুজন বিচারক অভিজিৎবাবু ও বিশ্বজিতবাবু গিরিশ মঞ্চে ওই সময়ে উপস্থিত ছিলেন। আশা করি আমার বক্তব্যের উদ্দেশ্য বুঝতে কোনও পড়াশোনা জানা মানুষের পক্ষে অসুবিধা হবে না।

যাইহোক, রাজনৈতিক আন্দোলন তার গতানুগতিক পথেই চলবে। আর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও তার নেতৃত্ব নিজ নিজ যোগ্যতায় সেই আন্দোলনকে মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য বা জনপ্রিয় করে তুলতে সক্ষম হবে। আমার অভিমত কিন্তু একটু অন্যরকম। এই মুহূর্তে জেহাদীদের মদতপুষ্ট এই তৃণমূলকে পরাস্ত করতে ছত্রপতি শিবাজীর ন্যায় গেরিলা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে হবে। আন্দোলনকে সামাজিক আন্দোলনে পরিবর্তিত করতে ও রাজ্যের সমস্ত সনাতনীকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারলে, তবেই রাজ্যের এই তালিবানী সরকারের পতন সম্ভব।

মনে রাখতে হবে, এই রাজ্যের সিপিএমও জেহাদীদের মদতপুষ্ট। যা সারা পৃথিবীতে প্রমাণিত। সুতরাং এই সনাতনীদের একত্রিতভাবে আগামী ৫ ই ডিসেম্বর মায়াপুরে ৫ হাজার কন্ঠে একত্রে গীতা পাঠ, ১২ই ফেব্রুয়ারি ২০২৩-এ হুগলি জেলার ত্রিবেণীতে লক্ষাধিক সনাতনীকে নিয়ে কুম্ভস্নান ও উক্তস্নানে বাংলার সমস্ত শক্তিপীঠ পরিক্রমা করে তার জল ও মাটি অর্পণ ও আগামী ২০২৩-এর ডিসেম্বরে কলকাতার রেড রোডে ১০ হাজার কণ্ঠে গীতা পাঠ এক নতুন আন্দোলনের সূচনা করবে। সংযুক্ত হিন্দু ফ্রন্ট এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ লেখক সংযুক্ত হিন্দু ফ্রন্টের সভাপতি। এই প্রবন্ধের লেখায় মতামত তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত। আপনিও আপনার মতামত জানিয়ে সংবাদ কলকাতার এই পাতায় লেখা পাঠাতে পারেন। সব মতাদর্শের লেখায় এখানে সাদরে গ্রহণ যোগ্য।ইউনিকোড ফন্টে লেখা টাইপ করে মেইল করতে হবে। আমাদের ই-মেইল আইডি : sangbadkolkata@gmail.com

Related posts

Leave a Comment