সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপি-বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র নেতৃত্ব দেওয়া উচিত তৃণমূল-সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সম্প্রতি এই দাবি তুলেছেন তৃণমূল সাংসদরা। একে একে এই দাবিতে সহমত জ্ঞাপন করেছেন শরদ পাওয়ার থেকে লালু প্রসাদও। এবার এ বিষয়ে মুখ খুললেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বের প্রসঙ্গে ‘ইন্ডিয়া’য় আলোচনার দাবিও করেছেন তিনি। সোমবার সংসদ চত্বরে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে অভিষেক বলেন, ‘এই বিষয়ে ইন্ডিয়ার বৈঠকে আলোচনা হবে। ইন্ডিয়া জোটে বর্তমান যে নেতানেত্রীরা রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-ই সবচেয়ে বর্ষীয়ান এবং ওজনদার নেত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাত বারের সাংসদ। নয়ের দশক থেকে চার বারের কেন্দ্রের মন্ত্রী ও পরে তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী।’
উল্লেখ্য, লালু প্রসাদের মতো হেভিওয়েট নেতারা সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইন্ডিয়া জোটের নেত্রী করার দাবি জানালেও অভিষেকের অবস্থান খানিক পৃথক। তৃণমূল-সুপ্রিমো মমতার রাজনৈতিক জীবনের বিশ্লেষণ করে অভিষেক বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনিই জোটের সবচেয়ে ওজনদার মুখ এবং রাজনৈতিক মারপ্যাঁচ সামলাতে যথেষ্টই দক্ষ। তাই এ বিষয়ে ইন্ডিয়া জোটের অন্দরে আলোচনা হওয়া জরুরি বলেও মন্তব্য করেছেন অভিষেক।
সর্বভারতীয় দলগুলি আঞ্চলিক দলগুলিকে যে দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে, তা নিয়েও পরোক্ষে খোঁচা দিয়েছেন অভিষেক। নিজ বক্তব্যের সমর্থনে হাতিয়ার করেছেন দলের ‘স্ট্রাইক রেট’কে। সাংসদের ভাষায়, ‘কোনও দলকে ছোট করে দেখা উচিত নয়। এই ভুল বিজেপি এবং কংগ্রেস উভয়ই করে। তৃণমূলই একমাত্র দল, যারা কংগ্রেস এবং বিজেপিকে হারিয়েছে।’
প্রসঙ্গত, এবার লোকসভায় আসন সংখ্যা বাড়িয়েছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল। পাশাপাশিই, বিজেপির সংখ্যা যেমন সারা দেশেই কমেছে, তেমন বাংলাতেও ১৮ থেকে কমে ১২-তে গিয়ে ঠেকেছে। এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের ‘স্ট্রাইক রেট’ স্মরণ করিয়ে দিয়ে অভিষেকের বক্তব্য, ‘আমরা ২৯ হতে পারি, কিন্তু বাংলায় বিজেপিকে ১৮ থেকে ১২-তে নামিয়েছে তৃণমূল। অন্যদলের এবং তৃণমূলের স্ট্রাইক রেটে বিস্তর ফারাক আছে। অন্যদলের নেতানেত্রীকে বিজেপি ভাঙিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু তৃণমূলই একমাত্র দল, যেখানে বিজেপির নেতানেত্রী নিজে থেকে আসছেন এবং ভোটে জিতছেনও। ফলে জনগণের শক্তি এবং আঞ্চলিক দলকে ছোট করে দেখা উচিত নয়।’ এদিন অভিষেকের বক্তব্যের ছত্রে ছত্রে তৃণমূলের শক্তি প্রতিফলিত হয়েছে। আকারে ইঙ্গিতে জোট শরিক কংগ্রেসকে বড় বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল সেনাপতি। সেই সঙ্গে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইন্ডিয়া জোটের নেত্রী হিসাবে কতটা সুযোগ্য।
previous post