জলপাইগুড়ি, ২০শে ডিসেম্বর: আবাস যোজনার সার্ভে লিস্ট প্রকাশ্যে আসার পর প্রতিদিনই অশান্তি অব্যাহত জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন এলাকায়। বুধবার জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বেলাকোবা অঞ্চলের ডাঙ্গাপাড়া এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা ঘর লিস্টে নাম না থাকায় ক্ষিপ্ত হয়ে পথ অবরোধ করে প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখায়। প্ল্যাকার্ড এ লেখা দুর্নীতিমুক্ত সার্ভে করে প্রকৃতপক্ষে যারা ঘর পাওয়ার যোগ্য তাদের ঘর দিতে হবে। এলাকাবাসীর বক্তব্য যারা দিন আনে দিন খায় বাড়িঘর ভাঙ্গা অবস্থায় পড়ে রয়েছে তাদের আবাস যোজনা নাম নেই কিন্তু এলাকার যাদের পাকা ঘরবাড়ি এমনকি চাকরি রয়েছে তালিকায় নাম রয়েছে তাদের। তাদের দাবি স্বচ্ছ ভাবে সার্ভে করে যারা প্রকৃতপক্ষে ঘর পাওয়ার যোগ্য তাদের ঘর দেওয়া হোক। এলাকার পঞ্চায়েত প্রধানের নামেও রয়েছে ঘর কিন্তু গরিব পরিবারের নামে নেই।
অন্যদিকে বুধবার বেলা ১২টা নাগাদ জলপাইগুড়ি জেলার অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার করলা ভ্যালি চা বাগানের শ্রমিকেরা ঘরের লিস্টে নাম না থাকায় ক্ষোভে জলপাইগুড়ি বিডিও অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায় এবং ঘরের লিস্টে চা শ্রমিকদের নাম যুক্ত করার দাবিতে ডেপুটেশন দেয়। এ বিষয় চা বাগান শ্রমিক পবন ভূমিজ বলেন আমরা ২৩০ টাকা হাজিরাতে বাগানে কাজ করি মালিকপক্ষ মজুরি বাড়ায় না I এই মজুরিতে আমাদের দিন চলে না। আগে বাগান কর্তৃপক্ষ বাড়ি ঘরের দায়িত্ব নিত। বাগানে পঞ্চায়েত ঢোকার পর থেকে ধীরে ধীরে সে দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছে বাগান মালিক। আমাদের বাড়িঘর নেই বললেই চলে। কিন্তু সরকার থেকে ঘর আসার পর জানতে পারছি সমস্ত বড়লোকদের নামে রয়েছে ঘর, আমাদের নামে কোন ঘর নেই। আমরা জলপাইগুড়ি সদর বিধানসভার অন্তর্গত ১৭/২৫ বুথের বাসিন্দা, আমাদের বাগানে ৩০০ শ্রমিকের বসবাস প্রত্যেকের বাড়ি কাঁচা। কারো বাড়িতে খড়ের ছাউনি তবে কারো কারো টিনের ঘর রয়েছে অনেকের বর্ষাকালে চালে প্লাস্টিক টাঙিয়ে থাকে, ঘর মেরামতের পয়সা নেই। তাদের মধ্যে মাত্র ২টি বাড়ির মালিকের নাম আছে ঘর প্রাপকদের লিস্টে। বারবার গ্রাম পঞ্চায়েতে বলে কাজ হয়নি,তাই আজ বাধ্য হয়ে আজ জলপাইগুড়ি সদর ব্লক এর বিডিও অফিসে বিডিওর কাছে এসেছি আমরা।
ডেপুটেশনে শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ায় সিআইটিইউ, চা শ্রমিকদের সাথে বিডিওর সাথে দেখা করেন শ্রমিক নেতা কৃষ্ণ সেন, শুভাশিস সরকার সহ অন্যান্য সি আই টি ইউ নেতৃবৃন্দ। সদর বিডিও দেবাশীষ মন্ডল বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে শোনেন এবং শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও চা শ্রমিকদের জানান কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে যে সার্ভে বর্তমানে চলছে তাতে নাম যুক্ত করার কোন কথা বলা নেই। শ্রমিকদের দাবি ন্যায্য অবশ্যই আবাস যোজনার ঘর প্রাপকদের লিস্টে তাদের নাম থাকা উচিত ছিল।
জলপাইগুড়িতে আবাস যোজনার তালিকায় বেনিয়মের অভিযোগ
