বিশেষ সংবাদদাতা, মালদা: এবার ছাত্রছাত্রীদের জীবনবাদী শিক্ষা দেবেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জেলার ছেলে মেয়েদের শেখাবেন জীবনের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করে কীভাবে মানুষের মতো মানুষ হয়ে উঠবে! পার্থ চট্টোপাধ্যায় নামের সঙ্গে এই নৈতিক শব্দবন্ধ পড়ে চমকে উঠলেন নাকি! কিন্তু ঘাবড়াবেন না। এই পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিয়োগ দুর্নীতিতে জেলে থাকা রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় নন।
আসলে গতকাল দুই দিনের মালদা সফরে এসেছেন প্রবীণ সাংবাদিক ও জীবনবাদী লেখক ড: পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ শতাব্দী এক্সপ্রেসে মালদা টাউন স্টেশনে নামেন পার্থ বাবু। স্টেশনে নামার সময় জীবনবাদী পাঠক-পাঠিকা ও শিক্ষক, অধ্যাপক শুভানুধ্যায়ীদের তরফে ফুলের মালা দিয়ে তাঁকে অভ্যর্থনা জানানো হয়। স্টেশনে ৮৬টি গোলাপ ফুলের মালা পরিয়ে পার্থ বাবুকে বরণ করে তাঁর দীর্ঘায়ু কামনা ও শুভেচ্ছা জানান সদস্যরা। পার্থবাবু বলেন, আমি খুব খুশি ও আপ্লুত হয়েছি। মোথাবাড়ি থানার উত্তর লক্ষীপুর হাইস্কুলে আজ শনিবার ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে মূল্যবোধ গঠন ও শিক্ষা বিষয়ক এক আলোচনায় আলোকপাত করেন প্রবীন লেখক। এছাড়া রবিবার মালদা শহরের টাউন হলে এক জীবনবাদী পাঠক পাঠিকা সম্মেলনে “জীবন গড়ার ম্যানেজমেন্ট” শীর্ষক আলোচনাসভায় মুখ্য বক্তা হিসাবে ভাষণ দেবেন। এই সম্মেলন শুরু হবে দুপুর ২টায়। সমাপ্ত হবে বিকাল ৫টায়।
জীবনবাদী দর্শনের প্রবক্তা, বিশিষ্ট লেখক, সমাজচিন্তাবিদ, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সাংবাদিক ও সাংবাদিকদের মাস্টারমশাই ৮৬ বছরের ড: পার্থ চট্টোপাধ্যায় মুখ্য বক্তা। পার্থবাবুর সঙ্গে এসেছেন তরুণ লেখক ও কর্পোরেট ট্রেনার অতনু প্রজ্ঞান বন্দ্যোপাধ্যায় ও কবি সমরেন্দ্রনাথ গাঙ্গুলী। ৮৬ বছর বয়সে জীবনবাদী পাঠক সম্মেলন অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে বলে মনে করছেন পাঠকরা। মালদহের বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে ড: চট্টোপাধ্যাকে তাঁর আসন্ন ৮৬তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সম্বর্ধনা দেওয়া হবে।
আগামীকাল রবিবারের কর্মশালাটি প্রধানত মালদহের বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ও তাঁদের অভিভাবকদের জন্য। কেমন করে জেলার ছেলে মেয়েরা জীবনের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করে প্রত্যেকে মানুষের মতো মানুষ হয়ে উঠবে, তার পথ নির্দেশ থাকছে এই কর্মশালায়। জীবনবাদী লেখক পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জীবনবাদী পাঠক-পাঠিকা সম্মেলন উপলক্ষে বিশেষ স্মরণিকা প্রকাশিত হবে। পার্থবাবুর আগমনে সম্মেলন ঘিরে পাঠকদের মধ্যে উৎসাহ রয়েছে যথেষ্ট। রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশিবার মালদায় এসেছেন তিনি। ১৯৫৫ সালে মালদহে প্রথম আসা। আর জীবনের শেষ বেলায় ৮৬ বছর বয়সে আবার পদার্পণ করলেন সেই মালদাতে। মহা জীবনের একটি বৃত্ত যেন শেষ হল পার্থবাবুর। জীবনবাদী সম্মেলন ও অনুষ্ঠান উপলক্ষে কলকাতা থেকে দে’জ পাবলিশিং এদিন পার্থ বাবুর ৮০টি জীবনবাদী বইয়ের একটি প্রদর্শনী ও বিক্রির ব্যবস্থা করেন।
previous post