শঙ্কর মণ্ডল: কলকাতাকে কি এখন থেকে সিটি অব জয় না বলে সিটি অব টাকা বলব? যেদিকে তাকাই সেদিকেই দেখছি বাণ্ডিল, বাণ্ডিল টাকা। ফের WB96K 1414 -নম্বরের গাড়ি থেকে বাণ্ডিল বাণ্ডিল নোট উদ্ধার হল। পরিমাণ এখনও অবধি কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। জানিনা শেষ পর্যন্ত কত হয়! নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তদন্তে শেষ অবধি ধরা পড়া তাপস মণ্ডল তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের থেকে ৫০ লক্ষ টাকা চেয়েছে। এমন প্রশ্ন করলে কিরকম সাবলীলভাবে বলে দিল আমি ১৯ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা দিয়েছি।
তাই আমি শুধু ৫০ লক্ষ নয়, ১৯ কোটি ৫০ লক্ষ চেয়েছি। অর্থাৎ কোটি কোটি টাকা এখন জলভাত। অথচ এই রাজ্যেই মানুষ সামান্য কিছু টাকার অভাবে শেষ হয়ে যাচ্ছে। নিকট আত্মীয়ের চিকিৎসা থেকে শুরু করে সন্তানের লেখাপড়া সব কিছুই টাকার অভাবে না করতে পারা লোকের সংখ্যা প্রচুর। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের গাল ভরা বুলি আজ আছে।
ইতিমধ্যেই আমরা দেখতে পাচ্ছি, চোর হিসাবে ধরা পড়া ব্যক্তির সাথে যৌথ সম্পত্তির খবর পাচ্ছি রাজ্যের সবচেয়ে প্রভাবশালী পরিবারের সদস্যের। আর আজ দুর্নীতিতে যে নাম উঠেছে, যদিও সে বর্তমান শাসক দলের নেতা সেই শাহাজাহান, ব্যক্তিটাই আসলে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা ও বহু খুনে অভিযুক্ত ও বিদেশী পাচারকাণ্ডে অভিযুক্ত।
কিন্তু তার পরিবর্তে সরকারি হাসপাতালে যদি বিনা পয়সায় চিকিৎসা ব্যবস্থা একটু ভালো হতো, তাহলে রাজ্যের গরীব মানুষগুলো বেঁচে যেত। কর্মসংস্থান একেবারেই নেই। এসএসসির লাগামছাড়া দুর্নীতি ধরা পড়লেও এই পরীক্ষাও বিগত ৭ বছর বন্ধ থাকায়, নতুন করে পরীক্ষা শুরুর দাবিতে একদল যুবক যুবতীরাও রাস্তায় নেমেছে। যদিও কোনও গণতান্ত্রিক আন্দোলন করার অধিকার এই রাজ্যে নেই। সরকার তার পুলিশ দিয়ে সব আন্দোলনকেই বেআইনিভাবে ভেঙে দিতে চায়। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের নির্বাচন পর্যন্ত করান না। আর তার জন্য ছাত্র ছাত্রীরাও রাস্তায় নামছে।
যদিও বর্তমানে এই রাজ্যে রাস্তায় নামার ক্ষমতা দেখানো খুবই কঠিন। কারণ এখানে কোনও গণতন্ত্র নেই। আছে পুলিশের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। আর নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে কোর্ট এটাকে গণদুর্নীতি আখ্যা দিয়েছে। তাই এই দুর্নীতির তদন্তের জন্য অনেক এবং দক্ষ আধিকারিকের প্রয়োজন। যা এই মুহূর্তে ইডি বা সিবিআই কারও কাছেই নেই। তাই অত্যন্ত প্রভাবশালী আসল মাথাকে ধরা সত্যিই কঠিন। এরা এই সুযোগে বহু প্রমাণ লোপাট করে ফেলবে। সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
যাই হোক, আমরা জানি, গাড়ি করে বস্তা ভর্তি টাকা কলকাতায় পাঠানোর উপেন বিশ্বাসের যে বক্তব্য পেয়েছিলাম, তা কখনও হয়তো জানা যাবে না। তবে এটা জলের মত পরিষ্কার, এই রাজ্যে সরকার এক গভীর আতঙ্কের স্রষ্টা। হ্যাঁ, এই আতঙ্ক একদিকে যেমন কোটি কোটি টাকার সার্বিক দুর্নীতি হতে পারে, ঠিক অন্যদিকে দেশবিরোধী বিদেশী যোগ থাকতে পারে। কারণ ইতিমধ্যেই এই রাজ্যের এক অতি প্রভাবশালী নেতার ব্যাংককের যোগ ধরা পড়েছে।
ইতিমধ্যেই আমরা দেখতে পাচ্ছি, চোর হিসাবে ধরা পড়া ব্যক্তির সাথে যৌথ সম্পত্তির খবর পাচ্ছি রাজ্যের সবচেয়ে প্রভাবশালী পরিবারের সদস্যের। আর আজ দুর্নীতিতে যে নাম উঠেছে, যদিও সে বর্তমান শাসক দলের নেতা সেই শাহাজাহান, ব্যক্তিটাই আসলে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা ও বহু খুনে অভিযুক্ত ও বিদেশী পাচারকাণ্ডে অভিযুক্ত। তাই এই ধরনের বিভিন্ন ঘটনায় প্রমাণ করে বিদেশি যোগের।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ লেখক সংযুক্ত হিন্দু ফ্রন্টের সভাপতি। এই প্রবন্ধে মতামত তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত। আমাদের ই-মেল: sangbadkolkata@gmail.com