সংবাদ কলকাতা, ২১ জানুয়ারি: নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে এবার গ্রেপ্তার করা হল তৃণমূলের যুব নেতা কুন্তল ঘোষকে। শনিবার তদন্তের জন্যে তাঁকে ইডি দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আদালতে ইডি তাঁর বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নাম করে ৩০ কোটি টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ করেছে। শনিবার সকালে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর দুপুরে কুন্তলকে ব্যাঙ্কশাল আদালতের বিশেষ ইডি আদালতে পেশ করেন তদন্তকারীরা। তদন্তের জন্য তাকে ১৪ দিনের হেফাজতে চায় ইডি। সেসময় তার বিরুদ্ধে এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ জানায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
জানা গিয়েছে, এদিন কুন্তলের বাড়ি থেকে ঘুষের হিসাব সম্বলিত একটি কালো ডায়েরি উদ্ধার করেছে ইডি। সেই ডায়েরিতে দেখা যাচ্ছে, ২০১৬ সাল থেকে বিভিন্ন চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে মোট ৩০ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন কুন্তল। চাকরি পাইয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেই টাকা নেওয়া হয়েছে। জেরার মুখে কুন্তল একথা স্বীকারও করেছেন।
উল্লেখ্য, মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ তাপস মন্ডল গ্রেপ্তার হওয়ার পর সাংবাদিকদের সামনে দাবি করেছিলেন, তৃণমূলের যুব নেতা কুন্তল ঘোষ তাঁর পরিচিতদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছিলেন। সেই ঘুষের পরিমাণ ১৯ কোটি ৪৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। এছাড়াও আরও অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন তৃণমূলের ওই যুব নেতা। বিষয়টির তদন্তে নেমে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, তাপস মন্ডলের দাবি মিথ্যা নয়।
ইডির আইনজীবী বলেন, তদন্তের শুরুতে আমরা ভেবেছিলাম দুর্নীতি ভারত মহাসাগরের সমান। বিষয়টির তদন্তের পর এখন দেখছি দুর্নীতি প্রশান্ত মহাসাগরের সমান। ওই আইনজীবী বলেন, প্রাথমিকে চাকরি পাইয়ে দেওয়া, ডিএলএডে অফলাইন ভর্তি, উচ্চ প্রাথমিক, নবম – দশম, একাদশ–দ্বাদশ, গ্রুপ ডি ও গ্রুপ সি নিয়োগ সহ একাধিক ক্ষেত্রে ঘুষ নিয়েছেন কুন্তল।
তদন্তে ইডি এই দুর্নীতির কিংপিনকে খুঁজে পেতে চাইছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা জানতে চাইছেন, কার নির্দেশে তিনি টাকা নিতেন? তিনি কার মাধ্যমে এবং কিভাবে চাকরির ব্যবস্থা করতেন তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। আর কার কার কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন তাও খতিয়ে দেখতে চান তাঁরা। সেজন্য তাকে হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছে ইডি।
এদিকে আদালতে কুন্তলের আইনজীবী জানিয়েছেন, কুন্তল প্রথম থেকেই তদন্তে সহযোগিতা করে আসছেন। তিনি সহযোগিতা করেও গ্রেপ্তার হলেন। অথচ যিনি টাকা দিয়েছেন, সেই মানিক ভট্টাচার্যের কিছু হল না।