নিজস্ব সংবাদদাতা, পাথরপ্রতিমা, ১৭ সেপ্টেম্বর: সুন্দরবনের প্রত্যন্ত দ্বীপ এলাকার মানুষদের প্রতিনিয়ত বাঘ-কুমিরের সঙ্গে লড়াই করে জীবন যাপন করতে হয়। জলে কুমির আর ডাঙ্গায় বাঘের আতঙ্ক সর্বদাই সুন্দরবনের এইসব এলাকার মানুষদের মনের মধ্যে যেন অব্যাহত। দৈত্যাকার কুমির প্রায় সময় সুন্দরবনের প্রত্যন্ত দ্বীপ এলাকাগুলির খাঁড়িতে দেখা যায়। কিন্তু এবার দেখা গেল গৃহস্থের পুকুরে। জানা গিয়েছে, শনিবার বিকালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমা ব্লকের বনশ্যামনগর এলাকায় এক ব্যক্তির পুকুরে একটি বিশালাকার কুমির দেখতে পান গ্রামবাসীরা। এরপর গ্রামে কুমিরের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কুমিরটিকে আটক করার জন্য গ্রামেরই মানুষজন বনবিভাগকে খবর দেন। খবর পেয়ে রামগঙ্গা রেঞ্জের বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। বেশ কয়েক ঘণ্টার প্রচেষ্টায় রাতে বনকর্মীরা বাগে আনেন ওই কুমিরটিকে। বেশ কয়েক ঘন্টা ধরে কুমির ও মানুষের লড়াই চলে। সেই লড়াই দেখতে পুকুরের পাড়ে ভিড় জমান হাজার হাজার মানুষ।
বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, কুমিরটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১২ ফুট ও ওজন প্রায় ৩০০ কেজি। বনকর্মীরা কুমিরটিকে উদ্ধারের পর পাথরপ্রতিমার ভগবতপুর কুমির প্রকল্পে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। এ বিষয়ে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বনবিভাগের আধিকারিক মিলনকান্তি মন্ডল জানান, পাথরপ্রতিমার রামগঙ্গা রেঞ্জের বনশ্যামনগরে একটি গৃহস্থের পুকুরে কুমির দেখতে পান গ্রামবাসীরা। এরপর গ্রামবাসীরা তড়িঘড়ি খবর দেন বনবিভাগে। সেই খবর পাওয়া মাত্রই সময় নষ্ট না করে বনবিভাগের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। বেশ কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় অবশেষে কুমিরটিকে উদ্ধার করেন বনবিভাগের কর্মীরা। ভগবতপুর কুমির প্রকল্প থেকে কোনওভাবে এই কুমিরটি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে।
এছাড়াও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য প্রায় সময় সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীতে ও খালে বনদপ্তরের পক্ষ থেকে কুমির ছাড়া হয়। সম্প্রতি অমাবস্যার কোটালের জেরে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীগুলিতে জলস্ফীতি দেখা দিয়েছে। তাই প্রাথমিক অনুমান, এই জলস্ফীতির কারণেই ওই কুমিরটি লোকালয় ঢুকে পড়েছিল। বনবিভাগের আধিকারিক ও কর্মীরা নিরাপদে উদ্ধার কুমিরটিকে করেছেন। কুমিরটিকে ভগবতপুর কুমির প্রকল্পে নিয়ে যাওয়া হয়েছে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য। পুরোপুরি সুস্থ করার পর কুমিরটিকে পুনরায় সুন্দরবনের নদীতে ছেড়ে দেওয়া হবে।
previous post