সংবাদ কলকাতা, ৩ আগস্ট: ব্রিটিশ আমলে জাহাজে চেপে বিলেত যাত্রার কথা অনেক শুনেছি। এখন উড়োজাহাজ বা প্লেনে চেপে বিদেশ যাত্রার কথা হামেশাই শোনা যায়। কিন্তু তাই বলে গাড়িতে চেপে লন্ডনে পাড়ি? খুবই বিরল ঘটনা। সচরাচর এমন কথা শোনা যায় না। যদিও বহুকাল আগে এই নজির ছিল। ১৯৫৭ সালের ১৫ এপ্রিল রসদ বোঝায় একটি টুরিস্ট প্রথম লন্ডন থেকে কলকাতার উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। প্রায় ৫০ দিনের সুদীর্ঘ যাত্রাপথ অতিক্রম করে কলকাতায় এসেছিল। যদিও পরে এই আন্তর্জাতিক রুটটিতে বাস যাত্রা বন্ধ হয়ে যায়। অবশেষে কৌশিক রায় ও দেবাঞ্জলী রায় নামে বাঙালি দম্পতির হাত ধরে সেই যাত্রা আবার শুরু হতে চলেছে। আগামী ২৪ আগস্ট ফের ১০ জন যাত্রী গাড়িতে চেপে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছেন।
তবে এবার আর বাসে নয়, মোট চারটি গাড়িতে চেপে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন তাঁরা। যাত্রাপথে শুধু ইংলিশ চ্যানেলে চারটি গাড়ি জাহাজে তুলতে হবে। বাকি পথ ড্রাইভ করেই যাবেন ওঁরা। মাঝখানে পড়বে নেপাল, চীন, উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, ইরান, আরমেনিয়া, জর্জিয়ার মতো ২৩টি দেশ। শনিবার কৌশিক-দেবাঞ্জলী একটি সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে এই যাত্রার কথা ঘোষণা করেন। উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক মদন মিত্র।
জানা গিয়েছে, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ওঁরা লন্ডনে গিয়ে পৌঁছবেন ২৫ অক্টোবর, এমনটাই আশা করছেন রায় দম্পতি। এর আগে বহু দেশে গিয়ে নানা রকমের অভিজ্ঞতা হয়েছে এই দম্পতির। কৌশিক বলছিলেন, ‘একবার তেহরানে গিয়েছিলাম। সেখানে এক ব্যক্তি আমাদের হোটেল থেকে নিয়ে গিয়ে নিজেদের বাড়িতে গিয়ে রাখলেন। আমরা প্রায় এক সপ্তাহ সেখানে ছিলাম।’
এমনিতেই বাঙালি দম্পতি কৌশিক রায় ও দেবাঞ্জলী রায় অ্যাডভেঞ্চার খুবই ভালোবাসেন। এর আগেও তাঁরা গাড়িতে চেপে ৫০টির বেশি দেশ ঘুরে এসেছেন। এবার তাঁদের এডভেঞ্চার লন্ডন। তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন দুই জন ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি। জানা গিয়েছে, কৌশিকের বাড়ি চন্দননগর। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী। তাঁর স্ত্রী দেবাঞ্জলী পেশায় একজন চিকিত্সক। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে কৌশিক বলেন, ‘আমরা এভারেস্ট বেস ক্যাম্প, তুর্কমেনিস্তানের মতো দেশে যাব। যদিও তুর্কমেনিস্তানে খুব একটা লোকজন যায় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের যাত্রাপথে যে নদীগুলো আসবে, সেই নদীর জল আমরা সংগ্রহ করে নিয়ে যাব। যা দুর্গাপুজোর সময় টেমস প্যারেডে ব্যবহার করা হবে।’
next post