সংবাদ কলকাতা: বিএসএফ যতই কড়া হয়, পাচারকারীরা নতুন নতুন উদ্ভাবনী পদ্ধতি আবিষ্কার করে। পুলিশের চোখে ধুলো দিতে নতুন নতুন পন্থা মাথায় খেলে যায় তাদের। এবার ধরা পড়ল রান্নার গ্যাসের মধ্যে করে ফেনসিডিল পাচার। সোমবার গাইঘাটায় বিএসএফ-এর হাতে ধরা পড়ল এই অভিনব পাচারচক্র। উদ্ধার হয়েছে ৩০৭ বোতল ফেনসিডিল। যদিও পাচারকারীদের কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি সীমান্তরক্ষী বাহিনী। পলাতক পাচারকারীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে বিএসএফ।
প্রসঙ্গত, গত ২০ এপ্রিল স্বরূপনগরে পার্সেলের মাধ্যমে ফেনসিডিল পাচারের ঘটনা সামনে আসে। সেদিন হাকিমপুর সীমান্তে বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে এক ডাক কর্মী। পোস্ট অফিসের নকল পার্সেলে সে ফেনসিডিল পাচার করত। সেই পার্সেলের ওপর আসল পার্সেলের বার কোড নকল করে লাগানো থাকত।
জানা গিয়েছে, এদিন দুপুর ১২টা নাগাদ গাইঘাটার পিপলি সীমান্ত চৌকিতে এই ঘটনা ঘটে। কর্মরত জওয়ানরা লক্ষ্য করেন, তেঁতুলবেড়িয়া বাজার থেকে বিএসএফ চেকপোস্টের দিকে এক ব্যক্তিকে বাইকে আসতে দেখেন। বাইকের পিছরের ক্যারিয়ারে ছিল দু’টি গ্যাস সিলিন্ডার এবং একটি গ্যাসের উনুন। তাঁকে দেখে তল্লাশির জন্য জওয়ানরা থামতে বলেন। কিন্তু,বাইক আরোহী বাইকটি ফেলে বাজারের দিকে পালিয়ে যান। এতে বিএসএফ জওয়ানরা না নিশ্চিত হয়ে যান, বাইকে নিশ্চয় কোনও পাচার দ্রব্য আছে।
জওয়ানরা প্রথমে বাইকে তল্লাশি শুরু করেন। কিন্তু কিছু না পেয়ে গ্যাস সিলিন্ডার খুঁটিয়ে দেখতে থাকে। রান্নার গ্যাসের খালি সিলিন্ডারের ওজন দেখে সন্দেহ হয় বিএসএফ-এর। সিলিন্ডারে টোকা মারলে খালি মনে হলেও তা যথেষ্ট ভারী। ফলে বিএসএফ সেটি উল্টেপাল্টে দেখতে শুরু করেন। একটি সিলিন্ডার ওল্টাতেই সন্দেহ আরও তীব্র হয়। দেখা যায়, নিচে ঝালাইয়ের দাগ রয়েছে। যা সচরাচর কোনও সিলিন্ডারে থাকে না। ছেনি, হাতুড়ি দিয়ে চাপ দিতেই ঢাকনার মতো খুলে যায় সেটি। বেরিয়ে আসে ভিতরে থরে থরে সাজানো ফেনসিডিল। যার ভাঁজে ভাঁজে দেওয়া ছিল মোটা কাগজ। যাতে বহনের সময় ধাক্কা লেগে আওয়াজ না হয়। দুটি সিলিন্ডার থেকে এভাবে ৩০৭টি ফেনসিডিল উদ্ধার হয়েছে। যার ভারতের বাজারে আনুমানিক মূল্য ৬৩ হাজার টাকা। বিএসএফ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চোরাকারবারিরা ওই ফেনসিডিল এ দেশ থেকে বাংলাদেশে পাচারের চেষ্টা করছিল। উদ্ধার হওয়া ফেনসিডিল গাইঘাটা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। পাচারের এই নয়া কৌশল নজরে আসার পর রাজ্যের অন্যান্য সীমান্তের বিএসএফ-দেরকে সজাগ করে দেওয়া হয়েছে।